জিএসটি জট কাটাতে আজ রাজ্যে জেটলি

কলকাতা থেকেই জিএসটি বিল পাশের রাস্তা খুলতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী-অরুণ জেটলিরা। মঙ্গলবার থেকে কলকাতায় অমিত মিত্রের নেতৃত্বে সব রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের কমিটির বৈঠক বসছে। রাজ্যসভায় শক্তি বৃদ্ধির পরে এ বার সেই এমপাওয়ার্ড কমিটিতেও ঐকমত্য তৈরি করতে কলকাতায় যাচ্ছেন জেটলি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৬ ০৯:৩৮
Share:

কলকাতা থেকেই জিএসটি বিল পাশের রাস্তা খুলতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী-অরুণ জেটলিরা।

Advertisement

মঙ্গলবার থেকে কলকাতায় অমিত মিত্রের নেতৃত্বে সব রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের কমিটির বৈঠক বসছে। রাজ্যসভায় শক্তি বৃদ্ধির পরে এ বার সেই এমপাওয়ার্ড কমিটিতেও ঐকমত্য তৈরি করতে কলকাতায় যাচ্ছেন জেটলি। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর আশা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে জিএসটি-তে নিঃশর্ত সমর্থন জানিয়েছেন, তার পরে তাঁর অর্থমন্ত্রী কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে সদর্থক ভূমিকাই নেবেন। ফেব্রুয়ারিতে এমপাওয়ার্ড কমিটির দায়িত্ব পাওয়ার পরে এ বারই প্রথম অমিতবাবুর নেতৃত্বে বৈঠক বসতে চলেছে।

২০১৭-র ১ এপ্রিল থেকে জিএসটি চালুর কথা বাজেটে ঘোষণা করেছিলেন জেটলি। তা করতে হলে জুলাইয়ে সংসদের বাদল অধিবেশনেই জিএসটি বা পণ্য-পরিষেবা কর চালুর জন্য সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ করাতে হবে। রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত এলাকায় ঢুকে কেন্দ্রের কর বসানোর ক্ষমতা নিশ্চিত করতেই এই সংবিধান সংশোধন দরকার। তার পর মডেল জিএসটি আইনের বিলটিও সংসদে পাশ করাতে হবে। মঙ্গল ও বুধবার, কলকাতায় দু’দিনের বৈঠকে সেই জিএসটি বিলের খসড়া নিয়েই আলোচনা হবে। এ বিষয়ে সব রাজ্যের সহমত প্রয়োজন। কারণ কেন্দ্রীয় মডেল আইন অনুসরণ করে রাজ্যগুলি নিজেদের রাজ্যে জিএসটি চালুর জন্য বিধানসভায় বিল পাশ করাবে।

Advertisement

মুশকিল হল, গত বছরের মে মাসে লোকসভায় এই সংক্রান্ত সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ হলেও রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাবে মোদী সরকার জিএসটি বিল পাশ করাতে পারেনি। কারণ কংগ্রেস তিনটি বিষয়ে আপত্তি তুলে বসে রয়েছে। সম্প্রতি রাজ্যসভায় ৫৭টি আসনে নির্বাচনের পর কংগ্রেসের সঙ্গে ব্যবধান অনেকটাই কমিয়ে এনেছে বিজেপি। এনডিএ-র শক্তিও এখন ইউপিএ-র থেকে সামান্য হলেও বেশি। কিন্তু এখনও সবটাই নির্ভর করছে আঞ্চলিক দলগুলির উপর। জেটলি বলেন, ‘‘রাজ্যসভার ভোটের পরে জিএসটি-র সমর্থক দলগুলির শক্তি বেড়েছে। যারা বিরোধিতা করছে, তাদের শক্তি কমেছে।’’

জেটলি এখন এমপাওয়ার্ড কমিটিতে ঐকমত্যের মাধ্যমে কংগ্রেসের আপত্তিগুলি খারিজ করে দিতে চাইছেন। জিএসটি চালু হলে শিল্পোন্নত রাজ্যগুলির রাজস্বে ক্ষতি হবে বলে তাদের জন্য ১ শতাংশ বাড়তি করের প্রস্তাব দিয়েছিলেন জেটলি। কংগ্রেস তার বিরোধিতা করছে। জিএসটি-র হারও সংবিধান সংশোধনী বিলেই বেঁধে দেওয়ার দাবি তুলেছে কংগ্রেস। জিএসটি-র বিবাদ নিষ্পত্তি নিয়েও কংগ্রেসের নির্দিষ্ট প্রস্তাব রয়েছে। জেটলি চাইছেন, তিনটি বিষয়েই কমিটিতে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্য গড়ে তুলতে। যাতে কংগ্রেসের রাজনৈতিক আপত্তিকে গুরুত্বহীন করে দেওয়া যায়।

অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের বক্তব্য, সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ করাতে হলে রাজ্যসভায় উপস্থিত সদস্যের দুই-তৃতীয়াংশের ভোট দরকার। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বর্তমান বিলটিতেই তাঁর পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। কংগ্রেস ছাড়া বাকি দলগুলিরও মোটের উপর জিএসটি-তে সমর্থন রয়েছে। সে ক্ষেত্রে বাদল অধিবেশনে বিল পাশ করাতে পারলে ডিসেম্বরের মধ্যেই জিএসটি আইনের খসড়া বিল তৈরি করে জিএসটি পরিষদের অনুমোদন আদায় করে নেওয়া সম্ভব হবে।

এখন প্রশ্ন একটাই। সংখ্যার বিচারে পিছিয়ে থাকলেও কংগ্রেস কি জিএসটি বিল পাশ হতে দেবে? বিজেপি নেতৃত্ব খুব ভাল করেই জানেন, হট্টগোলের মধ্যে কোনও ভাবেই সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ করানো সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে কংগ্রেস যে এখনও অনড়, তা স্পষ্ট করে দিয়ে দলের নেতা আনন্দ শর্মার মন্তব্য, ‘‘সংখ্যার বিচারে নয়, রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতেই জিএসটি বিল পাশ করাতে হবে মোদী সরকারকে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement