বীরভূমের শাহের জবাবি সভায় ফিরহাদের নিশানায় ‘এনকাউন্টার’রাজ। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
রাজ্য রাজনীতিতেও চলে এল উত্তরপ্রদেশের এনকাউন্টার প্রসঙ্গ। শুক্রবার বীরভূমের সভা থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। পূর্ব ঘোষণা মতো রবিবার তার পাল্টা সভা করল তৃণমূল। আর ওই সভা থেকেই রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্যে এল উত্তরপ্রদেশের এনকাউন্টারের কথা। বাংলার সঙ্গে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশের তুলনা টেনে ফিরহাদ বলেন, “এখানে উত্তরপ্রদেশের মতো এনকাউন্টার করতে দেওয়া হয় না।” এর পাশাপাশি রাজ্যে এনকাউন্টারের সংস্কৃতি তৈরি করতে দেওয়া হবে না বলেও জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, “বিজেপির কথায় যদি ভুল করেন, তবে বাংলা হয়ে যাবে উত্তরপ্রদেশ।” উত্তরপ্রদেশের ‘গ্যাংস্টার’ আতিক আহমেদের খুন হয়ে যাওয়া এবং তাঁর পুত্র আসাদের এনকাউন্টারে মৃত্যু নিয়ে তোলপাড় চলছে সারা দেশেই। এই আবহেই উত্তরপ্রদেশ এবং ‘এনকাউন্টার’ প্রসঙ্গ উঠল বীরভূমের সভা থেকেই।
গরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত হয়ে তিহাড় জেলে বন্দি রয়েছেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। দলীয় সতীর্থ অনুব্রতের পাশে দাঁড়িয়ে ফিরহাদ বলেন, “আমাদের নেতাকে গরু পাচার মামলায় বিনা কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে।” গরু পাচার রুখতে না পারার ‘ব্যর্থতা’ ফিরহাদ চাপিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার এবং শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ঘাড়ে। তাঁর কথায়, “উত্তরপ্রদেশ থেকে গরু যায় বাংলাদেশে। গরু পাচারের টাকা যদি কেউ নিয়ে থাকে, তবে সেটা উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন এবং বিএসএফের রক্ষাকর্তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।” বিরোধীদের জব্দ করতে ইডি এবং সিবিআইয়ের অপব্যবহার করা হচ্ছে, এই অভিযোগ তুলে শাহের পুরনো বক্তব্যকেই হাতিয়ান করেন ফিরহাদ। জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীই বলেছিলেন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, “শাহের বেলায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হলে, আমাদের বেলায় নয় কেন?”
বিজেপিকে আরও এক বার ‘ওয়াশিং মেশিন’ বলে কটাক্ষ করে ফিরহাদ রাহুল গান্ধী, অরবিন্দ কেজরীওয়ালদের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “সবাই চোর আর ওরা সবাই সাধু!” শুক্রবার এই বীরভূমের মাটিতেই সভা করে তৃণমূল শাসনের দুর্নীতি, স্বজনপোষণ নিয়ে সরব হয়েছিলেন শাহ। তারই পাল্টা সভা করে শাহ এবং বিজেপিকে আক্রমণ করল তৃণমূল।