কার্তিক ঢাকি
পঞ্চায়েত ভোটের দিন তিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন। অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি এবং সিপিএমের বিরুদ্ধে। কার্তিক ঢাকি (৫০) নামে জগৎবল্লভপুরের নবাসন গ্রামের ওই তৃণমূল কর্মী বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। শুক্রবার সকালে পাশের গ্রাম নরেন্দ্রপুরের একটি ধানজমি থেকে তাঁর দেহ মেলায় এ বার পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল ওই দুই বিরোধী দলের বিরুদ্ধে।
জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের এক কর্তা জানান, মৃতের মাথায় ও মুখে রক্তের দাগ ছিল। দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ দিন জা টিয়াকে নিয়ে ওই ধানজমিতে গরু বাঁধতে গিয়ে কার্তিকবাবুর দেহ দেখতে পান স্ত্রী সুলোচনা। এক সপ্তাহ আগে বাগনানের নপাড়ায় তৃণমূল নেতা মহসিন খান খুনের পরে এই ঘটনা অস্বস্তি বাড়িয়েছে পুলিশের। এ দিন সরিয়ে দেওয়া হয় বাগনানের আইসি উজ্জ্বল দাসকে। তাঁকে দক্ষিণ দিনাজপুরের হোমগার্ড দফতরের অফিসার করে পাঠানো হয়েছে। তাঁর বদলে বাগনানে আসছেন চন্দননগর কমিশনারেটে কর্মরত ইনস্পেক্টর অভিজিৎ সরকার। রাজ্য পুলিশের সদর দফতর থেকে শুক্রবারই এই নির্দেশ আসে।
জেলা সদর তৃণমূল সভাপতি অরূপ রায়ের অভিযোগ, ‘‘বিজেপি এবং সিপিএম হাত মিলিয়ে কার্তিককে খুন করেছে।’’ কার্তিকবাবুর মা রুমাদেবীও বলেন, ‘‘ভোটের দিনেও বিজেপি-সিপিএম হাত মিলিয়ে ছেলেকে মেরেছিল। এ বার ওকে শেষ করে দেবে ভাবতে পারিনি।’’ অভিযোগ মানেনি বিরোধী দু’দলই। ভোটের দিনে হামলার অভিযোগও তারা অস্বীকার করেছে। বিজেপির জগৎবল্লভপুর মণ্ডল সভাপতি অশোক সিংহের দাবি, ‘‘আমরা খুনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। আমরাও প্রকৃত তদন্ত চাই, যাতে সত্য বেরিয়ে আসে।’’ সিপিএমের জগৎবল্লভপুর এরিয়া কমিটির সম্পাদক বৈদ্যনাথ বসু বলেন, ‘‘ওই গ্রামে সিপিএম দুর্বল। অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’
নবাসন প্রাথমিক স্কুল বুথটি শঙ্করহাটি-২ পঞ্চায়েতের অধীনে পড়ে। দীর্ঘদিন ওই বুথ সিপিএমের দখলে থাকলেও এ বার প্রথম তৃণমূল জেতে। দলীয় প্রার্থীর এজেন্ট ছিলেন কার্তিকবাবু।