Uncontested Win

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের ঝাঁজ কমল পশ্চিম বর্ধমানে, তৃণমূলকে লড়তে হবে জেলার বহু আসনে

২০১৮ সালে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় পঞ্চায়েত ভোটের আগেই বহু আসনে জোড়াফুল ফুটিয়েছিল তৃণমূল। এ বার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের সেই ধারা কিছুটা থমকে গেল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৩ ১৮:০৭
Share:

পশ্চিম বর্ধমানে একাধিক আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় তৃণমূলের।

২০১৮ সালে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় পঞ্চায়েত ভোটের আগেই বহু আসনে জোড়াফুল ফুটিয়েছিল তৃণমূল। এ বার অবশ্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের সেই ধারা কিছুটা থমকে গেল ওই জেলায়। গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত স্তরে এ বার বহু আসনেই ত্রিমুখী লড়াই হতে চলেছে সেখানে। এর পিছনে নিজেদের দলীয় সংগঠনের উত্থান দেখছে বিরোধীরা। তবে শাসকদলের যুক্তি, বিরোধীদের এই ‘মুক্তাঞ্চল’ আসলে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার ফসল।

Advertisement

গত বার পশ্চিম বর্ধমান জেলার ৮৩৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে ৫৩২টি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দ‌খল করেছিল তৃণমূল। পঞ্চায়েত সমিতিতে ১৬১টি আসনের মধ্যে ৯৫টি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিল তারা। জেলা পরিষদে ১৭টি আসনের মধ্যে ১টি-তে তৃণমূল প্রার্থী ছাড়া কারও মনোনয়নপত্র জমা পড়েনি। এ বার অবশ্য গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে তৃণমূলের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের সেই ধারা কিছুটা অমিল।

পশ্চিম বর্ধমানের বরাবনি ব্লকের পানুড়িয়া এবং পাঁচগাছিয়া পঞ্চায়েত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তৃণমূল। সালানপুর ব্লকের বাসুদেবপুর-জেমারি, রুপনারায়ণপুর, বরাবনি ব্লকের জামগ্রাম এবং বারাবনি— এই পঞ্চায়েতগুলির বেশ কয়েকটি আসন তৃণমূল জিতেছে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। সালানপুরে পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসন তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে। দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের গোগলা পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতি আসন তৃণমূল পেয়েছে। বাকিগুলিতে অবশ্য ভোট হতে চলেছে। জামুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির ২৫টি আসনের চারটি কোনও লড়াই ছাড়াই এখন শাসকদলের দখলে। রানিগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসন তৃণমূল পেয়েছে কোনও লড়াই ছাড়াই।

Advertisement

পশ্চিম বর্ধমানে পঞ্চায়েত ভোটে রাজনৈতিক লড়াই নিয়ে আশাবাদী বিজেপি। গেরুয়াশিবিরের দাবি, গত বারের তুলনায় পশ্চিম বর্ধমানে বেশ কিছুটা চাঙ্গা হয়েছে তাদের সংগঠন। বিজেপির আসানসোল জেলার সভাপতি দিলীপ দে বলেন, ‘‘শাসকদলের শাসানি এবং ভয়ভীতিকে উপেক্ষা করে যে আসনগুলি আমরা টিকিয়ে রাখতে পেরেছি, সেই আসনগুলিতে আমরা লড়ব। যদি নিরপেক্ষ ভোট হয় তা হলে আমাদের ফল যে ভাল হবে তা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়।’’

বহু পঞ্চায়েতে প্রার্থী দিতে পারেনি পশ্চিম বর্ধমানের সিপিএম। তা নিয়ে স্বীকার করে নিয়েছেন দলের জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এ বার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। যে সব কর্মীরা ২০১১ সালের পরে তৃণমূলে চলে গিয়েছিলেন তাঁরা আবার আমাদের দিকে আসছেন। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজনও আমাদের দিকে ফিরে আসছেন। তৃণমূল তিনটি পঞ্চায়েত বিনা প্রতিদ্বিতায় জিতেছে। এ ছাড়া আরও ১০-১২টা পঞ্চায়েত হয়তো তারা জিতবে। কারণ ওই সব পঞ্চায়েতে ৫০ শতাংশের কম আসনে আমরা মনোনয়নপত্র আমরা জমা দিয়েছি। তবে মানুষকে সঙ্গে নিয়েই লড়ব আমরা।’’

পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর্বে ভিন্ন বার্তা দিতে বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেস প্রার্থীদের হাতে গোলাপ ফুল এবং পানীয় জলের বোতল ধরিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল কর্মীরা। তাঁরা বিরোধীদের চা পানের আমন্ত্রণও জানিয়েছিলেন। কিছু দিন আগে এই ছবি দেখা গিয়েছিল পশ্চিম বর্ধমানেরই সালানপুরে। সৌজন্যের রাজনীতির সেই উদাহরণ তুলে ধরে তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এখানে বরাবরই নিরপেক্ষ ভোট হয়। আমরা বিভিন্ন ব্লকে বিরোধীদের ফুল দিয়ে, চা খাইয়ে, আমের শরবত খাইয়ে মনোনয়নপত্র জমা করা করিয়েছি। বিরোধী নেতারা সংগঠন না করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বলতেই ভালোবাসেন। তাই তাঁরা সন্ত্রাসের অভিযোগ করছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement