ফের বিঁধলেন শুভেন্দুও

তৃণমূল ভাঙবে, দাবি দিলীপের 

এদিনই আবার রাজ্যের মন্ত্রী তথা পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূলের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী নাম না করে সরব হয়েছেন দিলীপের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৩৮
Share:

খড়্গপুরের সুভাষপল্লিতে দিলীপ ঘোষ। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা উপ-নির্বাচনে ধাক্কা খেয়েছেন নিজের ‘খাসতালুকে’। রেলশহরে জিতেছে তৃণমূল। তাই এবার পুরসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে খড়্গপুরে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছেন দিলীপ ঘোষ। শনিবার সেখানে এসে বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দাবি করলেন, তৃণমূল কাউন্সিলরেরা বিজেপি-র সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এদিনই বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি।

Advertisement

এদিনই আবার রাজ্যের মন্ত্রী তথা পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূলের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী নাম না করে সরব হয়েছেন দিলীপের বিরুদ্ধে। নন্দীগ্রামে দলীয় অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘একজন বিরাট নেতা বড় বড় কথা বলেছিলেন। কাঁথিতে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছেন যে এখানে বিজেপি-র প্রার্থী দেবাশিস সামন্ত ৬ লক্ষ ভোট পেয়েছেন। কিন্তু একবারও বলেননি যে খড়্গপুরে বিজেপি হেরেছে।’’

শনিবার খড়্গপুরে এসে দিলীপ দাবি করেন, তৃণমূলের অনেক কাউন্সিলর তো বটেই, বহু মানুষও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। পরিস্থিতির চাপে তাঁরা আসতে পারছেন না। খড়্গপুরের যেসব কাউন্সিলর যোগাযোগ রেখেছেন তাঁদের টিকিট দেবেন? দিলীপের জবাব, “ওই কাউন্সিলরেরা উপনির্বাচনের আগে থেকেই যোগাযোগ রেখেছেন। তৃণমূল উপনির্বাচনে জিতলেও তাঁদের মনোভাব বদলায়নি। কারণ তাঁরা শুধু পুরনির্বাচন নিয়ে ভাবছেন। আমি সকলকে বিজেপির পতাকা দিতে রাজি। টিকিট দেওয়ার বিষয়ে পরে ভাবব।’’ পুরনির্বাচনে তৃণমূলের কোন্দলের সুফলও তাঁরা পাবেন বলেও দাবি করেছেন দিলীপ। তবে তৃণমূলের খড়্গপুর শহর সভাপতি রবিশঙ্কর পাণ্ডের পাল্টা দাবি, ‘‘গত চার বছর ধরে দিলীপ ঘোষের মুখে এই কথাই শুনছি। তবে একজন কাউন্সিলরও আমাদের ছেড়ে যাননি।’’

Advertisement

২০১৫ সালের পুরভোটে ৩৫টি আসনের মধ্যে ৭টি পেয়েছিল বিজেপি। পরে ৫ জন বিজেপি কাউন্সিলরকে ভাঙিয়ে বোর্ড দখল করে তৃণমূল। সেই প্রসঙ্গ তুলে এদিন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি এদিন অভিযোগ করেন, “গতবার ভয় দেখিয়ে, পুলিশ ও মাফিয়া দিয়ে ভোট আটকানো হয়েছিল। কাউন্সিলর ভাঙানো হয়েছিল। এ বার হবে না।’’

উপনির্বাচনে জয়ের পরেই খড়্গপুরে এসে খড়িদায় একটি জৈন মন্দিরে গিয়ে কথা বলেছিলেন শুভেন্দু। এদিন দিলীপ খড়িদারই অন্য একটি জৈন মন্দিরে গিয়ে নতুন নাগরিকত্ব আইনের পক্ষে প্রচার করেন। পরে সালুয়ায় বৌদ্ধ সমাজ, সুভাষপল্লির গুরুদ্বারে শিখ সমাজের সঙ্গেও দেখা করেন তিনি। দিলীপের দাবি, “নতুন নাগরিকত্ব আইনে যে সমাজ উপকৃত হবে তাঁদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই আমি জৈন, বৌদ্ধ, শিখদের সঙ্গে দেখা করেছি।’’

এদিনই নতুন নাগরিকত্ব আইন প্রত্যাহারের দাবিতে রাজ্য জুড়ে অবস্থান কর্মসূচি নিয়েছিল তৃণমূল। দিলীপের কটাক্ষ, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক সপ্তাহ রাস্তায় হেঁটেছেন। কী হয়েছে? ওঁদের সঙ্গে লোক নেই। তৃণমূলের নেতাদের মধ্যেও দ্বিমত রয়েছে। মানুষ কী চাইছে সেটা আমাদের মিছিলে লোক দেখলেই বোঝা যাচ্ছে।”

দিলীপের দাবিকে অবশ্য গুরুত্ব দিতে চাননি তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি। তিনি বলেন, ‘‘উপ-নির্বাচনের পরে খড়্গপুর তো বটেই, গোটা রাজ্যেই দিলীপ ঘোষ গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছেন। তিনি তৃণমূল ভাঙানোর কথা বলার পরে উপনির্বাচনে মানুষ ওদের কাউন্সিলরদের ওয়ার্ডেই আমাদের জিতিয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement