মুখ শুধু মমতা, অন্য ছবিতে দলে নিষেধাজ্ঞা

মুকুল-কাণ্ডে হাত পোড়ার পরে দলে আর ‘দ্বিতীয় মুখ’ হিসেবে আর কাউকে তুলে ধরতে চায় না তৃণমূল। তাই, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া আর কোনও নেতা-নেত্রীর ছবি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি হল শাসক দলে। পুরভোটের প্রক্রিয়া চলাকালীনই দলের সমস্ত জেলা সভাপতিদের চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এ বার থেকে দলের কোনও কর্মসূচি নিয়ে পোস্টার বা হোর্ডিংয়ে মমতা ছাড়া আর কোনও নেতা-নেত্রীর ছবি দিয়ে প্রচার চলবে না। একমাত্র ভোটের প্রচারে (এখন যেমন পুরভোট প্রক্রিয়া চলছে) নেত্রীর ছবির সঙ্গে প্রার্থীর ছবি দিয়ে সাময়িক ভাবে প্রচার করা যেতে পারে বলে বুধবার দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৫ ০৫:৩৫
Share:

মুকুল-কাণ্ডে হাত পোড়ার পরে দলে আর ‘দ্বিতীয় মুখ’ হিসেবে আর কাউকে তুলে ধরতে চায় না তৃণমূল। তাই, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া আর কোনও নেতা-নেত্রীর ছবি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি হল শাসক দলে।

Advertisement

পুরভোটের প্রক্রিয়া চলাকালীনই দলের সমস্ত জেলা সভাপতিদের চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এ বার থেকে দলের কোনও কর্মসূচি নিয়ে পোস্টার বা হোর্ডিংয়ে মমতা ছাড়া আর কোনও নেতা-নেত্রীর ছবি দিয়ে প্রচার চলবে না। একমাত্র ভোটের প্রচারে (এখন যেমন পুরভোট প্রক্রিয়া চলছে) নেত্রীর ছবির সঙ্গে প্রার্থীর ছবি দিয়ে সাময়িক ভাবে প্রচার করা যেতে পারে বলে বুধবার দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন।

দলে এত দিন মমতার পরেই নেতৃত্বের ‘দ্বিতীয় মুখ’ হিসেবে সদ্য প্রাক্তন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়কেই তুলে ধরা হতো। সেই সঙ্গে দলের নেতা, বিধায়ক, সাংসদ থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধিদের ছবি দিয়ে প্রচার করা হতো। কিন্তু নেত্রীর সঙ্গে প্রচারের আলোয় এসে দলের অন্দরে অনেকে ‘সমান্তরাল সংগঠন’ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন বলে তৃণমূল নেতৃত্বের অভিমত। এখন মুকুলের বিরুদ্ধে এই ‘সমান্তরাল সংগঠন’ গড়ে তোলার অভিযোগই দলের অভ্যন্তরে উঠছে। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর বরদাস্ত করা হবে না বলে তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য।

Advertisement

পার্থবাবু জানিয়েছেন, এটা দলীয় অনুশাসনেরই একটা অঙ্গ। আগে থেকেই দলে নির্দেশ ছিল, সর্বোচ্চ নেতৃত্বের অনুমতি ছাড়া দলনেত্রীর ছবি দিয়ে প্রচার করা যাবে না। এটা এত দিন কেন করা হয়নি তা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে পার্থবাবু বলেন, “এত দিন মৌখিক ভাবে বলা হতো। এখন লিখিত ভাবে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।” কেন এখন এটা করা হচ্ছে, তা জানাতে তিনি বলেন, “এটা দলীয় নিয়ন্ত্রণের একটা অঙ্গ। দলে শৃঙ্খলা রক্ষা জরুরি।”

এখনও শহর কলকাতা ছাড়াও জেলাগুলিতেও দলনেত্রীর ছবির পাশাপাশি স্থানীয় নেতা বা জনপ্রতিনিধিদের ছবি দিয়ে তৃণমূলের বড় বড় হোর্ডিং, ব্যানার দেখা যাচ্ছে। সেগুলি খোলার কী হবে? পার্থবাবু বলেন,“ সমস্ত জেলা সভাপতিকে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সী চিঠি দিয়ে নির্দেশ দিয়েছেন, সাত দিনের মধ্যে এই ধরনের হোর্ডিং ও ব্যানার খুলে দিতে হবে।” অন্যথায় পুলিশকে দিয়ে খুলিয়ে দেওয়া হবে বলে পার্থবাবু স্পষ্ট জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনায় দলের এক কর্মিসভায় গিয়ে মঞ্চে নিজের ছবিও সরিয়ে দিয়েছিলেন পার্থবাবু। তৃণমূল ভবনে আসা সঞ্জয় বক্সী থেকে শুরু করে বিভিন্ন নেতাকেও তাঁদের ছবি লাগানো হোর্ডিং-ব্যানার সরিয়ে ফেলার জন্য পার্থবাবু বলে দেন। অন্য নেতারাও মনে করেন, দলনেত্রীর সঙ্গে ছবি দিয়ে নেতা-নেত্রীর আত্মপ্রচারই হয়। মুকুল-কাণ্ডের পরেই দলীয় নেতৃত্ব সতর্ক হয়েছেন এবং কড়াকড়ি করা হচ্ছে।

দলীয় অনুশাসন জারির পাশপাশি পুরভোটের প্রচারের কাজও তৃণমূলে পুরোদমে শুরু হয়ে গিয়েছে। দলের যুব সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এ বার পুরভোটে ওয়ার্ডভিত্তিক কিছু গুরুত্বপূর্ণ পুর-পরিষেবার তালিকা দিয়ে প্রচার শুরু হয়েছে। তবে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হলেই পুরোদমে নির্বাচনী প্রচার সভা শুরু হবে। এ মাসের ৩০ তারিখ উচ্চমাধ্যমিক শেষ হবে। তার পরেই দলের প্রচার সভা শুরু হবে বলে অভিষেক জানান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement