ছবি: সংগৃহীত।
কলকাতা পুরসভার ওয়ার্ড সংরক্ষণ নিয়ে দাবি এবং আপত্তির ক্ষেত্রে বিজেপিকে কয়েক যোজন পিছনে ফেলল তৃণমূল। বিজেপি ও সিপিএম— কেউই কোনও আপত্তি জানায়নি। কংগ্রেসের তালিকায় আপত্তি মাত্র একটি!
গত ১৭ জানুয়ারি কলকাতা-সহ ৯৩টি পুরসভার ওয়ার্ড সংরক্ষণের খসড়া প্রকাশিত হয়। সেই খসড়ার উপরে দাবি এবং আপত্তি জানানোর সুযোগ ছিল আমজনতা থেকে রাজনৈতিক দল—উভয়েরই। তার পরে সেই দাবি এবং আপত্তি নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে শুনানি করে জেলা প্রশাসন। সেই সব পর্ব মিটিয়ে আজ, সোমবার ওই ৯৩টি পুরসভার ওয়ার্ড সংরক্ষণের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হওয়ার কথা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন এবং কমিশন সূত্রের খবর, কলকাতা পুরসভায় ওয়ার্ড সংরক্ষণের দাবি এবং আপত্তি মিলিয়ে জমা পড়েছিল ২২টি আবেদন। নিয়মানুসারে, সবগুলির শুনানি হয়। সেই আপত্তি এবং দাবির ক্ষেত্রে প্রায় সবটাই তৃণমূলের তরফে পড়েছে। তবে তা দলগত ভাবে নয়। ব্যক্তিগত স্তরে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের তরফে ওয়ার্ড সংরক্ষণ নিয়ে দাবি এবং আপত্তি জানানো হয়। একটি মাত্র পড়ে কংগ্রেসের তরফে। মাত্র আট মাস আগে ১৮টি লোকসভার আসন পাওয়া বিজেপির তরফে আপত্তি এবং দাবি কিছুই জমা পড়েনি। সিপিএমও একই পথে হেঁটেছে।
আরও পড়ুন: আইনশৃঙ্খলা নিয়ে রাজ্যপালের ‘টিপ্পনি’
কলকাতায় সাংগঠনিক ভাবে বিজেপি অনেকটাই দুর্বল, তা জানেন তাঁদের নেতারা। ভোট প্রক্রিয়ার অন্যতম অঙ্গ ওয়ার্ড সংরক্ষণেও বিজেপির ভূমিকা সেই সাংগঠনিক দুর্বলতার প্রতিফলন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা। কলকাতা পুরভোটে কাউকে সামনে রেখে তাঁরা নির্বাচনে যাচ্ছেন না, তা ইতিমধ্যে জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কেন্দ্রের শাসক দলের এক নেতার কথায়, ‘‘আমরা আসন জিতলেও সবটা ধরে রাখা যাবে না। কারণ, তৃণমূল যে ভাবেই হোক তাঁদের দলে টানবে। এই পরিস্থিতিতে ওয়ার্ড সংক্ষরণ নিয়ে বেশি মাথা ঘামিয়ে লাভ কী? এখন শুধু মাঠে থাকার লড়াই। সেটাই আমরা করব।’’ গত কয়েকটি নির্বাচনে সিপিএম ক্রমেই ক্ষয়িষ্ণু শক্তিতে পরিণত হয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সেই কারণে হয়তো ওয়ার্ড সংরক্ষণের থেকেও সিপিএমের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভোট ময়দানের লড়াইতে নিজেদের টিকিয়ে রাখা।
খসড়া অনুযায়ী, ৯৩টি পুরসভা সংরক্ষণের গেরোয় পড়েছিলেন ৩২ জন চেয়ারম্যান, ২২ জন ভাইস চেয়ারম্যান, আট জন মেয়র পারিষদ, আসানসোল পুরসভার মেয়র এবং শিলিগুড়ি পুরসভার ডেপুটি মেয়রও ।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, খসড়ায় প্রকাশিত ওয়ার্ড সংরক্ষণ চূড়ান্ত তালিকায় খুব বেশি পরিবর্তন না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। যেখানে যা দাবি এবং আপত্তি জমা পড়েছিল, শুনানিতে তা নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। চূড়ান্ত তালিকায় সংরক্ষণ গেরোয় কে কে থাকলেন আর কে কে গেরো থেকে বেরোতে পারলেন, তা জানা যাবে আজ, সোমবার।