চুঁচুড়ায় সরস্বতীর মূর্তি দিয়ে সাজানো তৃণমূলের ট্যাবলো। —নিজস্ব চিত্র।
সরস্বতীর আগমন ঘটতে এখনও দিন দশেক বাকি। তবে তার আগেই এ বঙ্গের ‘বহিরাগত’দের বর্ণপরিচয় এবং সহজপাঠ-এর পাঠ দিতে সরস্বতীর মূর্তি দিয়ে ট্যাবলো সাজিয়ে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরছে তৃণমূল। রবিবার এমন দৃশ্যই দেখা গেল হুগলি জেলার চুঁচুড়ায়। সৌজন্যে, চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার। তবে তৃণমূলের এই উদ্যোগকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি।
তৃণমূল সূত্রে খবর, রবিবার চুঁচুড়ার ষণ্ডেশ্বর তলা মন্দিরে পুজো দিয়ে সরস্বতীর ট্যাবলো বার করেন অসিতবাবু। করোনার মতো অতিমারির আবহে প্রায় এক বছর ধরেই স্কুল-কলেজের মতো যাবতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। তবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে নবম থেকে দ্বাদশের ক্লাস শুরু হচ্ছে। তার পরেই পড়েছে সরস্বতী পুজোর তিথি। তবে সে পুজো আসার আগেই হঠাৎ এমন পরিকল্পনা কেন? অসিতবাবু বলেন, ‘‘অতিমারির জন্য স্কুল-কলেজ বন্ধ। দেবী সরস্বতীর কাছে প্রার্থনা, এমন পরিস্থিতি যেন আর না আসে। ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হোক। পাশাপাশি, বিজেপি-কেও বিদ্যাবুদ্ধি দিক, এই প্রার্থনা করি।’’
বিজেপি-কে বর্ণপরিচয় বা সহজপাঠ শেখানোর পিছনে তাঁর ‘উদ্দেশ্যে’-ও খোলসা করেছেন অসিতবাবু। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বিজেপি-র নেতারা বাইরে থেকে এ রাজ্যে আসছেন। যাঁরা এই রাজ্যের, তাঁরাও সহজপাঠ বা বর্ণপরিচয় জানেন না। রবীন্দ্রনাথ কোথায় জন্মেছিলেন, বিদ্যাসাগর কে ছিলেন, তা তাঁদের জানা নেই। তাই সরস্বতী পুজোর আগেই ঢাক বাজিয়ে ট্যাবলো নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বিজেপি-কে সহজপাঠ এবং বর্ণপরিচয়ের পাঠ দিতে চাইছি।’’
রবিবার এমন দৃশ্যই দেখা গেল হুগলি জেলার চুঁচুড়ায়। —নিজস্ব চিত্র।
তবে তৃণমূল বিধায়কের এই কর্মকাণ্ডকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। দলের রাজ্য কমিটির সদস্য স্বপন পাল বলেন, ‘‘বিজেপি-কে বর্ণপরিচয় পড়াতে হবে না। বরং তৃণমূল কর্মীদের বর্ণপরিচয়, কথামালা, বোধদয় পড়ান।’’ স্বপনবাবুর দাবি, ‘‘বিধায়ক নিজেই জানেন না কে রামচন্দ্র? তিনি এক বার বলেছিলেন, মহাভারতের গর্ব ছিলেন রাম। বিধানসভা ভোট আসছে বলেই এ সব লোকদেখানো ব্যাপার হচ্ছে। এত দিন স্বামীজী, রবীন্দ্রনাথ, বিদ্যাসাগরের কথা মনে পড়েনি। এ সব করেও কোনও লাভ হবে না।’’