রানাঘাটে রাজ্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে মিছিল। রয়েছেন ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুপ্রিয় চন্দ।
কর্মসূচি আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই মতো রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলে বিজেপির বিরুদ্ধে পথে নামল তৃণমূলের ছাত্র-যুব সংগঠন। দাবি, কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাগুলিকে ‘নিরপেক্ষ’ হতে হবে। দু’দিনের এই কর্মসূচি শেষে আগামী ১৪ অগস্ট দলের ভবিষ্যৎ ভূমিকা ও পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করার কথা রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, শুক্রবার পথে নামল তৃণমূলের ছাত্র-যুব সংগঠন। কলকাতা-সহ রাজ্যের সমস্ত ব্লকে চলল প্রতিবাদ।
শুক্রবার দুপুর ১টা নাগাদ উত্তর কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করে তৃণমূলের ছাত্র-যুব সংগঠন। দুপুর আড়াইটে নাগাদ মধ্য কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট থেকে এবং বিকেল সাড়ে তিনটে থেকে দক্ষিণ কলকাতার আশুতোষ কলেজ থেকে শুরু হয় মিছিল। হাতে প্ল্যাকার্ড, ‘ইডি, সিবিআই জবাব দাও’। মুখে স্লোগান, ‘বন্দে মাতরম’।
হুগলির আরামবাগের কালীপুর মোড়, পাণ্ডুয়ার তৃণমূল ভবন থেকেও শাসকদলের ছাত্র-যুব সংগঠনের সদস্যেরা মিছিল বার করেন। অন্য দিকে, পশ্চিম মেদিনীপুর আবার সরগরম দুই প্রতিপক্ষের প্রতিবাদে। গুড়, বাতাসা বিলি করে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন খড়্গপুরের বিজেপি বিধায়ক হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায় ওরফে হিরণ। পথচারীদের হাতে ওই গুড়, বাতাসা তুলে দেন। বৃহস্পতিবার অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতারের পর এ ভাবেই প্রতিবাদ দেখিয়েছিল বিজেপি। আবার নারায়ণগড়, চন্দ্রকোনা রোড এলাকায় পাল্টা প্রতিবাদ মিছিল করে তৃণমূল। প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘ইডি, সিবিআই দিয়ে বাংলাকে ভয় দেখানো যাবে না।’
ইডি, সিবিআইকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারের অভিযোগ তুলে আসানসোলেও প্রতিবাদ মিছিল করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে এই প্রতিবাদ মিছিল আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু হয়। শেষ হয় পুরনো স্টেশনে। আসানসোল শিল্পাঞ্চলের তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন মিছিলে। রানাঘাটে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে প্রতিবাদ মিছিল হয়। ছিলেন ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুপ্রিয় চন্দ। সেখানে বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে গ্রেফতারির দাবি ওঠে। রায়গঞ্জে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল অগ্রবালের নেতৃত্বে এবং কৃষ্ণনগর, কল্যাণীতেও পথে নামে ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা। বর্ধমানে কার্জন গেটের বিক্ষোভ সভায় তৃণমূলের প্রতিবাদে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, বিধায়ক খোকন দাস, অলোক মাঝি।
প্রতিবাদের আঁচ পড়েছে উত্তরবঙ্গেও। শিলিগুড়ি কলেজের সামনে পড়ুয়া ও জেলা কর্মী সমর্থকেরা অংশ নেন মিছিলে। নেতৃত্ব দেন দার্জিলিং জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি (সমতল) পাপিয়া ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রাজনৈতিক ভাবে পেরে ওঠেনি, তাই তৃণমূল কংগ্রেসের প্রভাবশালী নেতৃত্বের পেছনে ইডি, সিবিআইকে লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যখনই রাজনৈতিক ভাবে পেরে উঠছে না, তখনই এই ধরনের কাজ হচ্ছে। এটা খুবই অন্যায়। কাল যা হয়েছে, তা ধিক্কারজনক ঘটনা। রাজনৈতিক ভাবে এই মোকাবিলা করতে চাই। কিন্তু মোদীজির অঙ্গুলিহেলনে সিবিআই চলছে, ইডি দফতরটা বিজেপির দফতর হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজ নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করলে শুধু মাত্র তৃণমূল নেতাদের পেছনে তারা থাকত? বিজেপির কোনও নেতা নেই? এটা অন্যায়। আগামী দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আরও বড় আন্দোলনে আমরা পথে নামব।’’ কোচবিহারের দিনহাটা, রায়গঞ্জেও হয়েছে প্রতিবাদ মিছিল।