মেদিনীপুরে গাঁধীমূর্তির সামনে তৃণমূলের অবস্থান। —নিজস্ব চিত্র।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) বাতিলের দাবিতে হওয়া আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মিছিল করেছেন পরের পর। সিএএ এবং এনআরসি বাতিলের দাবিতে রাজ্যব্যাপী ধর্না কর্মসূচিরও ঘোষণা করেছিলেন মমতা। শনিবার সেই কর্মসূচি পালন করল তৃণমূল। কলকাতা এবং জেলায় জেলায় রাজ্যের মন্ত্রী থেকে শুরু করে বিধায়কেরা নিজের নিজের এলাকায় এই ধর্নায় শামিল হয়েছেন। এই আইনের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক উত্তপ্ত আবহের প্রসঙ্গ টেনে মানুষকে শান্তিপূর্ণ পথে আন্দোলনের পরামর্শ দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
রাজ্যের মন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম নরেন্দ্র মোদীকে বিঁধে বলেন, ‘‘মোদী ভুলে গিয়েছেন, যাঁদের ভোটে জিতে উনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, তাঁদেরই পুলিশ গুলি করে মেরেছে!’’ শান্তিপূর্ণ পথে কেন্দ্রের এই ‘বিভাজন-নীতি’র বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এ দিন বেহালার ধর্নামঞ্চ থেকে পার্থবাবু বলেন, ‘‘অসত্য কথা প্রচার করে, মানুষকে বিভ্রান্ত করে এ রাজ্যকে অসুবিধায় ফেলতে চাইছে বিজেপি। কিন্তু, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি মানুষের আস্থা আছে। তাই শান্তিপূর্ণ ভাবে মানুষের অধিকার রক্ষার আন্দোলন চলবে।’’
আরও পড়ুন:
সম্প্রতি সিএএ এবং এনআরসি-র বিরুদ্ধে হওয়া আন্দোলন হিংসাত্মক চেহারা নিয়েছিল যে জেলাগুলিতে, তার অন্যতম মালদহ, মুর্শিদাবাদ। এ দিন ওই দুই জেলাতেই অবস্থান করেছে শাসকদল। তবে, মালদহে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও সামনে এসেছে। জেলার বাকি ১১টি বিধানসভা কেন্দ্রে একটি করে ধর্নামঞ্চ হলেও রতুয়া কেন্দ্রে ৫০ মিটারের ব্যবধানে দু’টি মঞ্চ করা হয়। একটি মঞ্চে ছিলেন রতুয়ার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়, অন্য মঞ্চে ছিলেন রতুয়া বিধানসভার অন্তর্গত জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যদের বেশির ভাগ। পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ি বাসস্ট্যান্ডে হওয়া দলের অবস্থানেও দেখা যায়নি না প্রাক্তন ব্লক তৃণমূল সভাপতি এবং তাঁর অনুগামীদের। তাঁদের দাবি, এই কর্মসূচি নিয়ে দলীয় নেতৃত্বের তরফে কিছু জানানো হয়নি। সম্প্রতি কেশিয়াড়িতে ব্লক সভাপতি বদল হয়েছে। তার পর থেকে দলের কোনও কর্মসূচিতেই প্রাক্তন সভাপতিকে দেখা যাচ্ছে না।
নতুন নাগরিকত্ব আইনের নামে বিজেপি ধর্মীয় বিভাজন করতে চাইছে বলে অভিযোগ করেছেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রামের অবস্থান মঞ্চে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি সরকার দেশে ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শকে ভাঙতে চাইছে। এর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব নেত্রীর নেতত্বে।’’