মুর্শিদাবাদের কর্মিসভায় সৌমিক হোসেন, শুভেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।
ক’দিন আগেই মুর্শিদাবাদে এসে তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী বলে গিয়েছিলেন, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে জিততে হবে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে।
কিন্তু শনিবার তাঁরই সামনে বিরোধীদের কার্যত হুমকি দিলেন রাজ্য যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সৌমিক হোসেন। নবগ্রামের পলসন্ডায় প্রকাশ্য সভায় কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোট সামনে। বিরোধীদের মিছিলে কারা হাঁটছে তা লিখে রাখুন। ভোটের আগেই তাদের এমন ভিটামিন ট্যাবলেট দেব, তখন ওরা টের পাবে!’’
গত বিধানসভা ভোটের আগে ‘চড়াম চড়াম’ ঢাক বাজানোর হুঙ্কার ছেড়ে শিরোনামে ছিলেন পাশের জেলা বীরভূমের অনুব্রত মণ্ডল। প্রায় একই কায়দা নিয়েছেন ডোমকলের পুরপ্রধান সৌমিকও। গত গত বুধবার বহরমপুরে মদন মিত্রের সভাতেও প্রায় একই রকম হুমকি দিয়েছিলেন তিনি।
গত পুরভোটে ডোমকলে সৌমিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিয়েছিল সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি। কার্যত নির্বিরোধে পুরপ্রধানের কুর্সি দখল করেন সৌমিক। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘ডোমকলের মডেলেই ভোট হবে। বিরোধীদের বলছি, প্রচার করতে ঘর থেকে বাইরে বেরোবেন না। রাস্তায় আপনাদের কেউ ঠ্যাঙালে আমরা দায়ী থাকব না।’’
মুর্শিদাবাদের রাশ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর হাত থেকে অনেক দিন আগেই বেরিয়ে গিয়েছে। গত পুরভোটে নিজে পড়ে থেকেও তিনি ডোমকল বাঁচাতে পারেননি। সৌমিক এ দিন কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘সব আসন জিতে অধীর চৌধুরীর মুখে ঝামা ঘষে দিতে হবে।’’ যা শুনে অধীরের প্রতিক্রিয়া, ‘‘মানুষের ভোটে নয়, দখলদারির রাজনীতিতে ডোমকল
পুরসভা দখল করেছে তৃণমূল। সমাজবিরোধী ও পুলিশের জোরে ওরা বুথ দখলের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাই এই আস্ফালন।’’
নবগ্রাম ছাড়াও সমশেরগঞ্জের কাঁকুড়িয়া ও ফরাক্কার কলেজ মাঠে এ দিন তৃণমূলের কর্মিসভা হয়। তিন জায়গাতেই অধীরকে নিশানা করেন শুভেন্দুও। তাঁর দাবি, ‘‘মুর্শিদাবাদে তৃণমূলকে হারাতে অধীর চৌধুরী বিজেপির সঙ্গে জোট বাঁধতে চাইছেন। তিনি কখনও নকশাল করেছেন, কখনও সিপিএম করেছেন। এখন কংগ্রেস করছেন। বিজেপি করাটাই শুধু বাকি আছে!’’ অধীরের পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘বিজেপির সঙ্গে ঘর করতে তৃণমূলই অভ্যস্ত, কংগ্রেস নয়। এ সব অবান্তর কথা বলে লাভ নেই।’’