সিপিএমের কাছে তহবিলে হার তৃণমূলের

নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হিসেব অনুযায়ী ২০১৬-’১৭ সালে সিপিএমের আয় তৃণমূলের চেয়ে অন্তত ১৫ গুণ বেশি। ওই আর্থিক বছরে তৃণমূলের আয় হয়েছে ৬.৩৯ কোটি টাকা। আর সিপিএমের আয় ১০০.২৫ কোটি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:৪৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

রাজনীতির ময়দানে সিপিএম এখন দৃশ্যত ক্ষয়িষ্ণু। তৃণমূলের রমরমা তুলনায় অনেক বেশি। কিন্তু দলীয় তহবিলে তৃণমূলকে কয়েক গুণ পিছনে ফেলে দিয়েছে সিপিএম।

Advertisement

নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হিসেব অনুযায়ী ২০১৬-’১৭ সালে সিপিএমের আয় তৃণমূলের চেয়ে অন্তত ১৫ গুণ বেশি। ওই আর্থিক বছরে তৃণমূলের আয় হয়েছে ৬.৩৯ কোটি টাকা। আর সিপিএমের আয় ১০০.২৫ কোটি। খরচেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে টেক্কা দিয়েছে সিপিএম। তারা ওই বছরে খরচ করেছে প্রায় ৯৪ কোটি টাকা। তৃণমূল ২৪.২৬ কোটি।

আয়ের থেকে ব্যয় বেশি হওয়ার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন আসে, তৃণমূল কি তবে তহবিলে সঞ্চিত অর্থ থেকে সেই খরচ করেছে? পুরনো আরও দু’টি আর্থিক বছরের হিসেব দেখলে আপাত ভাবে সেটাই স্পষ্ট হয়। আবার একই সঙ্গে ধরা পড়ে তৃণমূলের আয়ে হঠাৎ মন্দার ছবি। ২০১৪-’১৫-এ তৃণমূলের ঘোষিত আয় ছিল ১২৩ কোটি ৯২ লক্ষ টাকার কিছু বেশি। খরচ ছিল সাড়ে ৯৫ লক্ষের মতো। ২০১৫-’১৬ সালে সেই আয় একলাফে নেমে যায় ৩৪ কোটি ৫৭ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকায়। ব্যয়ও কিছু কমে হয় ১৩ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা। ২০১৬-’১৭ সালে তা ৮১ শতাংশ কমে ৬ কোটি ৩৯ লক্ষে নেমে এসেছে। কিন্তু খরচ বেড়ে ২৪ কোটি ছাড়িয়েছে। দলের আয় কমছে কেন? উত্তর মেলেনি। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সী এবং কোষাধ্যক্ষ তমোনাশ ঘোষ কাউকেই ফোনে পাওয়া যায় নি।

Advertisement

দেশের ৭টি জাতীয় রাজনৈতিক দলের আয়-ব্যয়ের খতিয়ান আজ প্রকাশ করেছে বেসরকারি সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (এডিআর)। সেই খতিয়ান বলছে, নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী, তৃণমূলের আয়ের ৪০ শতাংশই এসেছে ফি ও সাবস্ক্রিপশন থেকে। যা থেকে তৃণমূলের আয় ২.৫৩ কোটি টাকা। ২.১৭ কোটি টাকা এসেছে অনুদান, চাঁদা থেকে। কুপন ও পত্রপত্রিকা বেচে এসেছে প্রায় ৮৪ লক্ষ টাকা। আয় কমেছে সিপিএমেরও। তবে তা তৃণমূলের মতো এক লাফে এত নিচে নামেনি। ২০১৪-’১৫ সালে তাদের আয় ছিল ১২৩ কোটি টাকার বেশি। পরের অর্থবর্ষে হয় ১০৭ কোটি। ২০১৬-’১৭ সালে ১০০ কোটি।

অডিট করা রিপোর্ট গত বছরের ৩০ অক্টোবরের মধ্যে জমা করার কথা ছিল। দেশের প্রধান দুই দল বিজেপি এবং কংগ্রেস এখনও তা দেয়নি। ৭টি জাতীয় দলের মধ্যে তৃণমূল এবং সিপিএম ছাড়া হিসেব দিয়েছে বহুজন সমাজ পার্টি, এনসিপি এবং সিপিআই। তাদের মধ্যে আয়ের হিসেবে সবচেয়ে এগিয়ে বহুজন সমাজ পার্টি। ২০১৬-’১৭ সালে মায়াবতীর দলের আয় ১৭৩ কোটি। দ্বিতীয় স্থানেই রয়েছে সিপিএম।

এর আগের বছর, অর্থাৎ ২০১৫-’১৬-র হিসেবে অবশ্য বিজেপি-ই সবচেয়ে ধনী দল ছিল। ওই বছর বিজেপির আয় ছিল ৫৭০ কোটি টাকার বেশি। তুলনায় কংগ্রেসের আয় ছিল ২৬১.৫৬ কোটি টাকা। শেষ হিসেব জমা পড়লে বোঝা যাবে কংগ্রেস এবং বিজেপির ফারাক কমল না কি আরও বাড়ল!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement