বিরোধী নেতা-নেত্রীদের সম্পর্কে কুত্সিত মন্তব্য করে দলে তীব্র ভর্ত্সনার মুখে পড়লেন তৃণমূল সাংসদ ইদ্রিস আলি। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশ্বস্ত সৈনিক হিসেবে নিজেকে প্রতিপন্ন করতে গিয়ে হামেশাই বিরোধীদের সম্পর্কে বেপরোয়া মন্তব্য করে থাকেন বসিরহাটের এই তৃণমূল সাংসদ। এখন বিধানসভা ভোটের মুখে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ডের উপরে নজরদারি রয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের। সেই কারণেই ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থে তৃণমূল নেতৃত্ব ইদ্রিসকে তিরস্কারের পথে হাঁটলেন বলে শাসক শিবিরের ব্যাখ্যা। বস্তুত, কমিশনের নজরদারি মাথায় রেখেই দুবরাজপুরে পুলিশ-খুনের মামলার বিষয়ে অসতর্ক মন্তব্য করার জন্য বীরভূমের জেলা নেতৃত্বকে হুঁশিয়ার করে দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে।
সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক গৌতম দেব সম্প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সারদা-কাণ্ডে মুকুল রায় এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেলে যেতে হবে। তার প্রেক্ষিতেই সম্প্রতি দু’টি সভায় গৌতমবাবুর জিভ টেনে ছিঁড়ে নেওয়ার এবং কোমর ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেন। পাশাপাশি, কংগ্রেস ও বিজেপি-র দুই নেত্রী দীপা দাশমুন্সি এবং রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে ইঙ্গিত করে তাঁদের ‘রামছাগল’ বলেও কটাক্ষ করেন। তৃণমূলের একাংশ ইদ্রিসের এমন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ। তারই প্রেক্ষিতে ইদ্রিসের বক্তব্যের ভিডিও ফুটেজ এনে যাচাই করে দেখেন শাসক দলের নেতৃত্ব। তার পরেই তাঁকে ভর্ত্সনার সিদ্ধান্ত। তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও ব্রায়েন বুধবার বলেন, ‘‘ইদ্রিস আলির মন্তব্য রুচিহীন ও অস্বাস্থ্যকর। দল এই ধরনের বক্তব্য সমর্থন করে না। তাঁর লিখিত ব্যাখ্যা চেয়ে পাঠানো হয়েছে। দল উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।’’ যদিও তার পরেও ইদ্রিসের দাবি, ‘‘এক জন নাগরিক হিসাবে ভুল কিছু বলিনি! আমি তো বলিনি এটা দলের বক্তব্য!’’ গৌতমবাবু আবার পাল্টা কটাক্ষ করেছেন, ‘‘ইদ্রিসের কথাবার্তা শুনে মনে হয়, উনি আইএস-এর লোক! এখানে চলে এসেছেন! আইএস ওঁকে পেলে মরুভূমিতে দ্রোন দিয়ে মেরে ফেলবে!’’
শাসনে সভার পরে ইদ্রিস পঠানকোট-কাণ্ডের প্রসঙ্গে নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করে অভিযোগ করেন, জঙ্গিদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর যোগ রয়েছে! যার জেরে এ দিন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহর প্রতিক্রিয়া, ‘‘তথ্য ছাড়াই প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে ইদ্রিসের মন্তব্যের জন্য ওঁকে গ্রেফতার করা দরকার! নয়তো ওঁর উচিত প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া।’’