গত বছর প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে পশ্চিমবঙ্গের ট্যাবলো।—ছবি পিটিআই।
প্রজাতন্ত্র দিবসেব কুচকাওয়াজে পশ্চিমবঙ্গের ট্যাবলো বাদ পড়ায় সরকারি ভাবে প্রতিবাদ জানাল রাজ্য সরকার। শুধু প্রতিবাদ নয়, কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা সচিবকে চিঠি লিখে ট্যাবলো নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে আরও স্বচ্ছতার দাবি জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ। নবান্নের খবর, বাংলার পাশাপাশি মহারাষ্ট্র সরকারও চিঠি লিখে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে প্রতিবাদ জানাতে চলেছে।
প্রতিরক্ষা সচিবকে শুক্রবার চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যসচিব। তাতে মূলত তিনটি বিষয়ে অভিযোগ করা হয়েছে। প্রথমত) ট্যাবলো নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরে গত ২২ এবং ২৯ নভেম্বর দু’টি বৈঠকে রাজ্যকে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু তার পরে আর কোনও বৈঠকে ডাক পায়নি রাজ্য। দ্বিতীয়ত) বৈঠকে ডাক না-পাওয়া মানে যে ট্যাবলো বাদ পড়া, তা ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু সরকারি ভাবে এই বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। তৃতীয়ত) বাংলার ট্যাবলো যে নির্বাচিত হয়নি, ১ জানুয়ারি প্রেস ইনফর্মেশন বুরোর একটি বিজ্ঞপ্তি থেকে তা জানা যায়। বংলা কেন বাদ পড়ল, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সেটা নবান্নকে জানায়নি।
মুখ্যসচিবের বক্তব্য, অতীতে কোনও রাজ্য কেন বাদ পড়ছে, নির্বাচন কমিটি তার কারণ ও কার্যবিবরণী লিপিবদ্ধ করত। সেই ব্যবস্থা এখন উঠে গিয়েছে। সেই কার্যবিবরণী লিপিবদ্ধ করার প্রথা ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন মুখ্যসচিব। রাজ্যের তথ্য-সংস্কৃতি দফতরের কর্তাদের একাংশ জানান, ২০১২ থেকে ২০২০ পর্যন্ত এই নিয়ে তিন বার বাদ পড়ল পশ্চিমবঙ্গের ট্যাবলো। নবান্নের খবর, ২০১৪ সালে ‘ছৌ’ এবং ২০১৬-য় ‘বাংলার বাউল’ থিমের উপরে ট্যাবলো সাজিয়ে প্রথম পুরস্কার জিতেছিল পশ্চিমবঙ্গ।
এ বার বাংলার ট্যাবলোর মূল থিম ছিল ‘সেভ ওয়াটার, সেভ লাইফ’ বা ‘জল বাঁচাও, জীবন বাঁচাও’। রাজ্যের বক্তব্য, জল সংরক্ষণ, পরিবেশ বাঁচানোর ক্ষেত্রে রাজ্যের বেশ কিছু কাজ সারা দেশে ছাপ ফেলার মতো। সেই জন্যই নবান্ন এই থিমের উপরে ট্যাবলো করতে চেয়েছিল। তা বাতিল করে পশ্চিমবঙ্গের প্রতি অবিচার হয়েছে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে নবান্ন।
সরকারি সূত্রের খবর, এ বছর ৫৪টি আবেদনের মধ্য থেকে ২২টি ট্যাবলো শেষ পর্যন্ত বেছে নিয়েছে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। ৩২টি রাজ্য থেকে ১৬টি এবং ২২টি কেন্দ্রীয় মন্ত্রক থেকে ছ’টিকে ঠাঁই দেওয়া হচ্ছে।