আচার্য পদে কে? নিজস্ব চিত্র।
আচার্য পদে রাজ্যপাল নয়, চাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এমনই দাবিতে সরব হল তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠন। মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার জন্য বিধানসভায় পাশ করা যে বিল রাজভবনে ১০ মাস ধরে পড়ে আছে, নতুন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস তাতে স্বাক্ষর করেননি। এ নিয়ে পূর্বতন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সময়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজভবনের সংঘাত তুঙ্গে উঠেছিল। গত বছর জুন মাসে ধনখড়কে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদ থেকে অব্যাহতি দিতে বিল পাশ করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কিন্তু সেই বিলে সায় দেননি ধনখড় স্বয়ং। জুলাই মাসেই কলকাতার রাজভবন থেকে দিল্লি পাড়ি দিয়ে দেশের উপরাষ্ট্রপতি হয়েছেন ধনখড়। তার পরে অস্থায়ী রাজ্যপাল লা গণেশন কয়েক মাস রাজ্যের দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু তিনিও ওই বিলে স্বাক্ষর করেননি। গত নভেম্বর মাসে রাজ্যপালের দায়িত্বে এসেছেন সিভি আনন্দ বোস। কিন্তু আচার্য বিলে তিনিও স্বাক্ষর করেননি। তাই মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার দাবিতে তৃণমূলের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠনের তরফে ‘হোক জনরব’ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপা এই দাবিতে হোর্ডিং লাগানোর পাশাপাশি তাঁরা রাজ্য জুড়ে সই সংগ্রহ অভিযানেও নেমেছেন। এক কথায় মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য পদে বসানোর বিষয়ে রাজভবনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে পথে নেমেছেন তাঁরা। রাজ্যে সব বিশ্ববিদ্যালয় তো বটেই, বিভিন্ন কলেজের বাইরেও এই দাবিতে হোর্ডিং লাগিয়েছে ওয়েবকুপা।
যদিও, ১০ মাস ধরে রাজভবনে পড়ে থাকা ওই বিলের প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, রাজ্যপালকে তিনি বলবেন, পশ্চিমবঙ্গে উচ্চশিক্ষার প্রচার ও প্রসার যদি চান, তা হলে বিল আটকে না-রেখে সই করে ছেড়ে দিন। আরও জানান, সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী অনন্তকাল আটকে রেখে রাজ্যপাল ওই বিল হিমঘরে পাঠাতে পারেন না। ওই বিলে রাজ্যপাল হয় সই করুন, না-হয় তা ফেরত পাঠান। এ বার বিধানসভায় তা পাশ করানো হবে।
আচার্য বিল প্রসঙ্গ তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকার কি অর্ডিন্যান্স আনবে? জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘অর্ডিন্যান্স তো আনা যেতেই পারে। এখন বিধানসভা চলছে না। জরুরি কোনও ব্যাপারে অর্ডিন্যান্স তো করা যায়। পরের বিধানসভা অধিবেশনে তা পাশ করিয়ে নেওয়া হয়।’’ মুখ্যমন্ত্রী এমনটা বললেও, নিজেদের অবস্থান থেকে সরতে নারাজ ওয়েবকুপা। তাঁরা চান রাজ্যপাল দ্রুতই বিলে স্বাক্ষর করে মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য পদে বসানোর সিদ্ধান্তকে আইনি মান্যতা দিন।