(বাঁ দিকে) রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
রাজভবনের সঙ্গে সম্পর্কের ‘উন্নতি’র পরই মন্ত্রিসভায় বড় রকমের রদবদলের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল শাসক শিবিরে। শূন্য ছ’টি পদে নতুন মন্ত্রী নিয়োগের এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে যেতে পারে ডিসেম্বর মাসেই। একই সঙ্গে কিছু দফতরে রদবদলের ভাবনাও রয়েছে শাসক শিবিরে।
রাজভবনের সঙ্গে টানাপড়েনের তিক্ততায় দীর্ঘ দিন ঝুলে রয়েছে মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ নেওয়ার বিষয়টি। উপনির্বাচনে সদ্যবিজয়ী ছয় বিধায়কের শপথ অনুষ্ঠানের পরে সেই জট খোলার রাস্তা দেখছে সরকার পক্ষ। তৃণমূল সূত্রে খবর, সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সরকারি সম্পর্কের ‘দরজা’ খুলেছে। এই অবস্থায় দ্রুত মন্ত্রিসভায় রদবদলের বিষয়টি সেরে ফেলতে চায় নবান্ন। এই মুহূর্তে ছয় মন্ত্রীর পদ ফাঁকা রয়েছে। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘গত অগস্ট-সেপ্টেম্বর মাস থেকেই মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ আনার সিদ্ধান্ত রয়েছে। বেশ কয়েক বার এ ব্যাপারে নবান্নের তরফে প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছিল রাজভবনে। কিন্তু ক্রমশ রাজভবন ও নবান্নের সম্পর্ক খারাপ হয়ে যাওয়ায় তা হয়নি।’’
আইনশৃঙ্খলা প্রশ্নে রাজ্যপালের সঙ্গে সরকারের বিরোধ শুরু হয়েছিল আগেই। তার পরে নারী নিগ্রহের অভিযোগ ঘিরে সেই বিরোধ চূড়ান্ত তিক্ত হয়ে ওঠে। প্রকাশ্যেই রাজ্যপাল সম্পর্কে সেই গুরুতর অভিযোগে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। এমনকি ,পুলিশি তদন্তও শুরু হয়েছিল রাজভবনে। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, তিনি, সরকার বা তৃণমূলের কেউ রাজভবনে যাবেন না। তবে সোমবার তৃণমূলের ছয় বিধায়কের শপথ পাঠ করাতে রাজ্যপাল বিধানসভায় আসতে রাজি হয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে। কথা না-হলেও নিয়মমাফিক স্বাগত জানাতে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের মুখোমুখি হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তৃণমূল সূত্রে খবর, এর পরে রাজভবনে শপথ অনুষ্ঠানে বাধা থাকার কথা নয়। সেই মতোই প্রস্তুতির ইঙ্গিত রয়েছে নবান্নে।
তৃণমূল সূত্রে খবর, ২০২৬ সালের ভোটের আগে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দফতরে বাড়তি ‘সক্রিয়তা’ চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই নতুন মুখ আনতে না-পেরে যে সব মন্ত্রীর হাতে একাধিক দফতর দিয়ে রাখা হয়েছে, সেগুলি নতুন হাতে ছাড়তে চান মুখ্যমন্ত্রী। সরাসরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত এই দফতরগুলির মাধ্যমে সরকারের কাজ সম্পর্কে মানুষের কাছে বার্তা দিতে দ্রুত মন্ত্রিসভায় সংযোজনের কাজ সেরে ফেলতে চান তিনি।
নতুন মুখ আনার পাশাপাশি কয়েকটি দফতরে বদল করতে পারেন মমতা। সে ক্ষেত্রে কয়েক জন মন্ত্রী বাদ পড়তে পারেন। এক ধাক্কায় সব না-হলেও অল্প দিনের মধ্যে গোটা প্রক্রিয়া শেষ হবে বলে শাসক শিবির সূত্রে ইঙ্গিত।