সাংবাদিকের উপরে আক্রমণের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্লক যুব তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি সৌমেন মাজির বিরুদ্ধে এখনও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি শাসক দল। যে ভোজালি দিয়ে এবিপি আনন্দের সাংবাদিক স্বপন নিয়োগীর উপরে হামলা চালানো হয়েছিল, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সেই অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশও। এই প্রেক্ষিতেই পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে, ধৃতদের কেন নিজেদের হেফাজতে নিতে চায়নি পুলিশ?
হামলার ঘটনায় ধৃত সৌমেন এবং তাঁর তিন অনুগামী গোবিন্দ মাঝি, শুভজিৎ হাজরা ও তাপস মাঝিকে বুধবারই দু’দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিল খাতড়া আদালত। ধৃতদের আজ, শুক্রবার ফের আদালতে তোলার কথা। সোমবার রাতে বাঁকুড়া
জেলার তালড্যাংরা থানার সামনে ভোজালি ও রড নিয়ে ওই সাংবাদিকের উপরে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। স্বপনবাবুর একটি হাত ভেঙে যায় মারের চোটে। আঘাত লাগে সারা শরীরেই। ঘটনার পরে সেই রাতেই গুরুতর জখম ওই সাংবাদিককে বাঁকুড়া মেডিক্যাল হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। পর দিন মঙ্গলবার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সৌমেন-সহ তাঁর তিন অনুগামীকে গ্রেফতার করে। তাঁদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। আহত স্বপনবাবু এখন কলকাতায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, তাঁর বাঁ হাতে অস্ত্রোপচার করে প্লেট বসানো হয়েছে। হাসপাতালে গিয়ে তাঁর পাশে দাঁড়ানো অব্যাহত রেখেছেন রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা। তৃণমূলের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের পরে এ দিন হাসপাতালে গিয়েছিলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ ও বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। তাঁরা প্রত্যেকেই সংবাদমাধ্যমের উপরে শাসক দলের ধারাবাহিক আক্রমণের সমালোচনা করেছেন।
কিন্তু পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরেও সৌমেনের বিরুদ্ধে দল কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না? বাঁকুড়ার জেলা তৃণমূল যুব সভাপতি শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাংবাদিককে মারধর দল সমর্থন করে না।
ঘটনার পরদিনই সৌমেনের বিষয়ে সংগঠনের রাজ্য নেতাদের জানানো হয়েছে। তবে তালড্যাংরার ঘটনাটি ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরেই ঘটেছে। এর সঙ্গে সংবাদ সংগ্রহ বা রাজনৈতিক দলের কোনও ধরনের সম্পর্ক নেই।’’