সাংবাদিক বৈঠকে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।
শুভেন্দু অধিকারীকে ফের তাঁর বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল তৃণমূল। শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা পাওয়া নিয়ে শুভেন্দুকে খোঁচা দিয়ে বলেন, ‘‘ওই ৩০টা সিআইএসএফ আর কনভয় নিয়ে আপনি যেন ফের নন্দীগ্রামেই দাঁড়ান। সিটটা আবার বদল করবেন না।’’
সেই সঙ্গে পরিবারতন্ত্রের প্রসঙ্গ তুলে কল্যাণের মন্তব্য, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের কেউ মুখ্যমন্ত্রী হতে আগ্রহী নন। নিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে। বিজেপি এই প্রচার করছে। অমিত শাহের লজ্জা পাওয়া উচিত। বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী করেছেন। অন্য কেউ নন।’’ এর সঙ্গে তিনি পাল্টা প্রশ্ন তোলেন ‘অধিকারী পরিবারতন্ত্র’ নিয়ে।
তৃণমূলের সাংবাদিক বৈঠকের কিছুক্ষণ আগেই মেদিনীপুরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভায় আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপি-তে যোগ দেন শুভেন্দু। সেখানে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতার শেষে ‘ভাইপো হঠাও’ স্লোগানও দেন তিনি। ডাক দেন ‘তোলাবাজ’ হটানোরও। শুভেন্দুর স্লোগানের নিশানা মমতার ভাইপো তথা ডায়মন্ড বারবারের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এ প্রসঙ্গে কল্যাণ সরাসরি ‘কাপুরুষ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন শুভেন্দুকে। তাঁর মন্তব্য, ‘‘বুকের পাটা থাকলে তো নাম করেই বলত।’’ পাশাপাশি অমিতের উদ্দেশে তাঁর খোঁচা, যিনি বলেছেন, তিন অঙ্কে পৌঁছাবে না। বলছি, ৫০ আসন পেরোবে না বিজেপি। ২১০ নিয়ে ফের মুখ্যমন্ত্রী হবেন মমতা। বঙ্গ বিজেপি ক্ষেপা ষাঁড়ের মতো ঘুরছে। তাদের মধ্যে আজ আরও কিছু ভিড়েছেন। ২০১৬ সালে নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে মমতা বলেছেন, ২৯৪ আসনে আমি প্রার্থী। নন্দীগ্রামেও বলেছিলেন, সেদিনও শুভেন্দু বলেননি, ‘দিদি আপনি না আমিই প্রার্থী’।’’
তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাপর্ব থেকে শুভেন্দু যে তৃণমূলে ছিলেন না, সে কথাও শনিবার মনে করিয়ে দিয়েছেন কল্যাণ। তাঁর প্রশ্ন ‘অধিকারী পরিবারতন্ত্রের কি বিশ্বাসযোগ্যতা আছে?’’ যদিও শুভেন্দু বিজেপি-তে যোগ দিলেও তাঁর বাবা শিশির অধিকারী এবং ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী এখনও তৃণমূলের লোকসভা সাংসদ। আর এক ভাই সৌমেন্দুও তৃণমূলেই রয়েছেন। শিশির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি। মেদিনীপুরের সভায় শুভেন্দুর বক্তৃতার রেশ ধরে কল্যাণ প্রশ্ন ছুড়েছেন, ‘‘তৃণমূল পচে গিয়েছে তো এত দিন ছিলেন কেন?’
আরও পড়ুন: নতুন বছরের গোড়ায় শুভেন্দুর ‘গড়’ নন্দীগ্রামে যেতে পারেন মমতা
সাংবাদিক বৈঠকে ব্যক্তি শুভেন্দুকেও নিশানা করেন কল্যাণ। বলেন, ‘‘যে প্রণামটা অমিত শাহকে শুভেন্দু করেছেন, সেটা ১০ বছর ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে করেছেন।’’ পাশাপাশি, নিজের মোবাইল ফোন তুলে ধরে দাবি করেছেন, সদ্য বিজেপি-তে যোগ দেওয়া নেতার অনেক ‘কুকথা’ সেখানে রেকর্ড করা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এখানে যে সব কথাবার্তা রয়েছে তা শুনলে ভাববেন, এ কোন ব্যক্তি বাংলার মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবিদার!’’
আরও পড়ুন: ‘দুয়ারে সরকার’এ নাম লিখিয়েছেন এক কোটিরও বেশি, টুইট মমতার