বাবাকে সুস্থ করতে তিতলির আবেদন। নিজস্ব চিত্র
বিছানায় শয্যাশায়ী বাবা। সঙ্গিন অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে ওষুধ-পথ্য দূর অস্ত, খাবার জোগাড় করাই কঠিন। এমন পরিস্থিতিতে বাবাকে বাঁচাতে নেটমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন হুগলির চুঁচুড়ার বাসিন্দা তিতলি দত্ত। ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী তিতলির সেই আবেদনে সাড়া দিলেন তৃণমূল সাংসদ দেব। টুইট করে তিতলির পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। তিতলির পাশে দাঁড়িয়েছেন আরও অনেকে।
গত ৩ বছর ধরে অসুস্থ চুঁচুড়া অন্তার বাগান এলাকার বাসিন্দা সন্দীপ দত্ত। প্রথমে তাঁর অগ্ন্যাশয়ের সমস্যা ধরা পড়ে। বেঙ্গালুরুতে চিকিৎসা করানোর চেষ্টা করেন সন্দীপ। কিন্তু অগ্ন্যাশয়ের অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজন ছিল সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা। তা না থাকায় বাধ্য হয়েই ফিরে আসতে হয় তাঁদের।
সল্টলেকে একটি গাড়ি সংস্থায় সেলসম্যানের কাজ করতেন সন্দীপ। কিন্তু অসুস্থতার কারণে চাকরি চলে যায় তাঁর। কয়েকজনের সাহায্যে গত মার্চ মাসে হায়দরাবাদে চিকিৎসা করাতে যান সন্দীপ। কিন্তু হাসপাতাল জানিয়ে দেয়, অস্ত্রোপচার করালেও তাঁর সুস্থ হয়ে ওঠার কোনও নিশ্চয়তা নেই। ফলে সেখান থেকেও ফিরে আসতে হয় তাঁকে।
শেষ পর্যন্ত কলকাতার শিশুমঙ্গল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সন্দীপকে। তাঁর কোমরের নীচে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। তাঁর অস্ত্রোপচারও হয়েছে। বর্তমানে শয্যাশায়ী সন্দীপ। এমন পরিস্থিতিতে সংসার চালানো দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে সন্দীপের স্ত্রী মুনমুনের। চুঁচুড়া নারী শিক্ষা মন্দিরের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী সন্দীপ এবং মুনমুনের মেয়ে তিতলি। এমন পরিস্থিতিতে নেটমাধ্যমে ভিডিয়ো বার্তা পোস্ট করেছিল তিতলি। তুলে ধরেছিল নিজেদের অসহায়তার কথা। ভিডিয়ো বার্তায় একটি ওষুধের প্যাকেট দেখিয়ে তিতলিকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমার বাবা খুবই অসুস্থ। আমাদের এই ওষুধটাই কেনার কোনও পয়সা নেই। দু’বেলা দু’মুঠো খেতেই পাই না, ওষুধ কোথা থেকে কিনব। আমার বাবাকে দয়া করে সাহায্য করুন।’’
তিতলির আবেদনে সাড়া দিয়ে এগিয়ে এসেছেন অনেকে। তিতলির ওই ভিডিয়ো বার্তাটি টুইটে তৃণমূল সাংসদ দেবকে ট্যাগ করা হয়। তার উত্তরও দিয়েছেন দেব। তিতলির পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
সন্দীপের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার। প্রাথমিক শিক্ষকদের সংগঠন উস্তির তরফেও সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তিতলির বাবা সুস্থ হয়ে উঠুক চাইছেন সকলেই।