গুরুত্বপূর্ণ দিনে এত কম হাজিরা নিয়ে সরকারপক্ষের মুখ্যসচেতক নির্মল ঘোষকে সতর্ক থাকতে বলেছেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
বিধানসভায় কেন্দ্র-বিরোধী প্রস্তাবে মঙ্গলবার সরকারপক্ষের জয় হয়েছে প্রায় বিপুল ভোটে। তবে নিজেদের শক্তির তুলনায় বিধানসভার অধিবেশনে তা এতটাই কম ছিল যে বিষয়টি শাসকদলের শীর্ষ নেতৃত্বের নজরে এসেছে। তারপরই গুরুত্বপূর্ণ দিনে এত কম হাজিরা নিয়ে সরকারপক্ষের মুখ্যসচেতক নির্মল ঘোষকে সতর্ক থাকতে বলেছেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ( বিএসএফ) কাজের এলাকা বাড়িয়ে সম্প্রতি নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তার বিরোধিতায় বিধানসভায় এ দিন সরকারপক্ষের প্রস্তাব পাশ হয়েছে ১১২ – ৬৩ ভোটে। বিরোধী বিজেপিকে বড় ব্যবধানে হারালেও দলের বিধায়কদের উপস্থিতি কম হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে শাসকদলের অন্দরে। বিষয়টি নিয়ে পরিষদীয় দলেও আলোচনা হয়েছে। পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিধানসভার কাজে পূর্ণসময় দেওয়ার জন্য বারবার বলা সত্ত্বেও কেন আমরা পূর্ণশক্তিতে থাকতে পারিনি, তা দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সকলকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।’’
বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল জিতেছিল ২১২ আসনে। তারপর উপনির্বাচনগুলির শেষে এই মুহূর্তে তাদের বিধায়ক সংখ্যা ২১৭। তবে এ দিন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এলাকা বৃদ্ধির বিরোধিতা করে আনা প্রস্তাব আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন তাঁদের বিধায়ক সংখ্যার অর্ধেক। প্রস্তাবটি আলোচনার জন্য বরাদ্দ ছিল দেড় ঘণ্টা। তা শেষ হলে ভোটাভুটি চায় বিরোধীরা। ভোট শেষে হাজিরার বিষয়টি নজরে আসে শীর্ষনেতৃত্বের। শুধু তাই নয়, সরকারপক্ষের হিসেব অনুযায়ী, এ দিন যত সংখ্যক বিধায়ক বিধানসভায় এসেছিলেন তাঁদের একটা অংশও প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটিতে অংশ নেননি। তা হলেও সরকারপক্ষের ভোট আরও কিছুটা বাড়তে পারত। সেই সূত্রে তৃণমূলের পরিষদীয় দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠেছে, আগে থেকে জানা সত্ত্বেও কেন ভোটাভুটির সময় দলের বিধায়কদের হাজিরা এত কম? মন্ত্রীরা সংখ্যায় অনেক কম ছিলেন।
রাজনৈতিক দিক থেকেও এ দিনের প্রস্তাবটি তৃণমূলের কাছে ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এ দিনের আলোচনায় না থাকলেও এই প্রস্তাবে রাজ্য সরকারের আপত্তির কথা জানিয়ে ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি রাজনৈতিক মঞ্চে বিএসএফের কাজের এলাকা বাড়ানোর কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে কেন্দ্রের অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপ বলে চিহ্নিত করেছে তৃণমূল। এই অবস্থায় বিধানসভার অন্দরে নিজেদের আনা প্রস্তাবে সরকারপক্ষের এই হাজিরা যথেষ্ট বিড়ম্বনার কারণ হয়েছে তাদের।