জল্পনা সত্যি করে সোমবার সদলবলে বিজেপিতে যোগ দিলেন সুনীল সিংহ।
জল্পনা ছিলই। সত্যিও হয়ে গেল। আরও এক বিধায়ক হাতছাড়া হলেন তৃণমূলের। সঙ্গে হাতছাড়া হল এক পুরসভাও। নোয়াপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক সুনীল সিংহ দিল্লিতে গিয়ে যোগ দিলেন বিজেপিতে। সুনীলের সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দিলেন গারুলিয়া পুরসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ সংখ্যক কাউন্সিলরও। ফলে ওই পুরসভাও বিজেপির নিয়ন্ত্রণে চলে গেল। এই পুরসভার হাতবদলের জেরে উত্তর ২৪ পরগনার শিল্পাঞ্চলে ৫টি পুরসভার নিয়ন্ত্রণ খোয়ালো তৃণমূল।
রবিবারই দিল্লি পৌঁছেছিলেন সুনীল সিংহ। আর সে খবর ছড়ানোর পরে দলবদলের জল্পনা জোরদার হয়েছিল বাংলার রাজনৈতিক শিবিরে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, সে জল্পনাকে নস্যাৎ করার চেষ্টাও তৃণমূল করেনি। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক নির্মল ঘোষ রবিবারই জানিয়েছিলেন যে, নোয়াপাড়ার বিধায়ক সুনীল সিংহ এবং গারুলিয়া পুরসভার বেশ কিছু কাউন্সিলরের দিল্লি যাওয়ার খবর দলের কাছেও রয়েছে। তাঁরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন বলে নির্মল জানিয়েছিলেন।
খতিয়ে দেখার বা ড্যামেজ কন্ট্রোলের সুযোগ অবশ্য তৃণমূল আর পেল না। সোমবার দিল্লিতে বিজেপির সর্বভারতীয় সদর দফতরে সদলবলে বিজেপিতে যোগ দিলেন সুনীল সিংহ। সুনীল কিন্তু শুধু নোয়াপাড়ার বিধায়ক নন, তিনি গারুলিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান পদেও রয়েছেন। সুনীল ছাড়াও গারুলিয়া পুরসভার আরও ১২জন কাউন্সিলর এ দিন বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। ফলে ২০ আসনের পুরসভায় ১৩টি আসনই এখন গেরুয়া শিবিরে। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানও দল বদলে নিয়েছেন। ফলে বোর্ড না ফেলেই বোর্ডের রং বদলে দিতে পেরেছেন সুনীলরা।
আরও পড়ুন, জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক নিয়ে জট কাটল
বিজেপি সদর দফতরে এ দিন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষ এবং মুকুল রায়ের উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগ দেন সুনীল এবং কাউন্সিলররা। তাঁদেরকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদও দেওয়া হয়। শিল্পাঞ্চলে এর আগেই ভাটপাড়া, কাঁচরাপাড়া, হালিশহর এবং নৈহাটি পুরসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলরকে নিজেদের দিকে টেনে নিয়েছে বিজেপি। এ বার সেই তালিকায় যোগ হল গারুলিয়া পুরসভার নামও।
লোকসভা ভোটের আগেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন ভাটপাড়ার দীর্ঘ দিনের তৃমমূল বিধায়ক অর্জুন সিংহ। বিজেপির টিকিটেই ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে লড়তে নেমেছিলেন তিনি। ধুন্ধুমার ভোটপর্ব পেরিয়ে অর্জুনই শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করেছেন ব্যারাকপুরে। অর্জুনের ভগ্নীপতি সুনীল সিংহও বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন, এ জল্পনা ভোটের আগে থেকেই চলছিল। কিন্তু সুনীল ভোটের আগে আনুষ্ঠানিক ভাবে দলবদল করেননি। ছেলে আদিত্যকে বিজেপিতে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন শুধু। তৃণমূল অবশ্য ভোটের পরেও সুনীলের উপরেই ভরসা রাখার চেষ্টা করেছিল। রাজনৈতিক হিংসায় শিল্পাঞ্চল অশান্ত হয়ে ওঠায় নৈহাটি পুরসভার সামনে ধর্না দিতে গিয়েছিলেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে সুনীল সিংহকে বড়সড় সাংগঠনিক দায়িত্ব দিয়ে এসেছিলেন তৃণমূল চেয়ারপার্সন। কিন্তু তার পরে এক মাসও কাটল না। সুনীল সদলবদলে যোগ দিলেন বিজেপিতে। সুনীলের এই দলবদল তাই তাৎপর্যপূর্ণ ধাক্কা হল তৃণমূলের পক্ষে। মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
(বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া -পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবর আমাদের রাজ্য বিভাগে।)
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।