Abdul Karim Chowdhury

অভিষেক-যাত্রায় অস্বস্তি বাড়ালেন করিম, রেড কার্পেট বিছিয়ে অপেক্ষার কথা শোনালেন বিধায়ক

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সবচেয়ে প্রবীণ বিধায়ক করিম চৌধুরী রেড কার্পেট বিছিয়ে আশায় ছিলেন তাঁর বাড়ি এসে তাঁকে নিয়ে সভায় যাবেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩ ১৯:৩৪
Share:
TMC MLA have not go to Abhishek Banerjees rally.

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও করিম চৌধুরীর মধ্যে বজায় রইল দূরত্ব। ফাইল চিত্র।

অভিমান করেই শেষ পর্যন্ত অভিষেকের সভায় গেলেন না ইসলামপুরের প্রবীণ বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী। রবিবার উত্তর দিনাজপুর জেলা জুড়েই জনসংযোগ যাত্রার কর্মসূচি স্থির করা হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সবচেয়ে প্রবীণ বিধায়ক করিম চৌধুরী রেড কার্পেট বিছিয়ে আশায় ছিলেন তাঁর বাড়ি এসে তাঁকে নিয়ে সভায় যাবেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু ইসলামপুরে সভা করেই নিজের পরবর্তী গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেন অভিষেক। আর তাতেই অভিমান করে সংবাদমাধ্যমে মুখ খুললেন করিম চৌধুরী।

Advertisement

পরে অভিমানের সুরে তিনি বলেন, ‘‘অভিষেকের সভায় যেতে আমাকে কেউ আমন্ত্রণ জানাননি। ফলে আমি যাব না বলেই ঠিক করি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে জানতে পারি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আসবেন আমার বাড়িতে। সেই মতো কর্মীরা বাড়িতে লাল কার্পেট বিছিয়ে ফুল দিয়ে সাজিয়ে তাঁকে স্বাগত জানানোর জন্য প্রস্তুতি নেন।’’ কিন্তু শেষ পর্যন্ত অভিষেক আসেননি। তাই আর ইসলামপুরের জনসভাতেও যাননি বিধায়ক।

অভিমান জাহির করে করিম চৌধুরী বলেন, ‘‘এই মিটিংয়ে যাওয়ার জন্য আমাকে আমন্ত্রণ জানাননি উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি বা যাঁরা আয়োজক তাঁরা। অভিষেকের অফিস থেকে একজন ফোন করে বলেছিলেন। বলেছিলেন, এরকম প্রোগ্রাম আছে। আপনাকে যেতে হবে। কিন্তু আমি যাইনি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আজ আমি ২ মাস ধরে বিদ্রোহী এমএলএ হিসাবে নিজেকে ঘোষণা করেছি। তৃণমূলের এখানকার সভাপতি আমার বিরোধী বলে ওঁকে এখানে যোগ করে দিয়েছেন। আমি বলেছিলাম, সন্ত্রাসবাদী নেতাকে আমার ইসলামপুর বিধানসভা কেন্দ্রে আমি চাই না। ব্লকটা আমার বিরোধী লোকের হাতে আছে। সন্ত্রাস করিয়ে এলাকাকে নিজের কব্জায় রাখতে চাইছেন।’’

Advertisement

তাঁর আরও দাবি, বিষয়টি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথাও হয়েছিল। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে অভিষেকের সভার জন্য তাঁর অফিসের এক জন পিওনকে দিয়ে তাঁকে জানানো হয়েছে। এখানকার জেলার নেতারা কেউ জানাননি। তাই তিনিও সভায় যেতে চাননি। করিম চৌধুরীকে নিয়ে দলের অস্বস্তির ঘটনা এই প্রথম নয়। ২০০৯ সালে লোকসভা ভোটের টিকিট না পেয়ে তৃণমূল ছেড়ে নির্দল হয়ে ভোটে দাঁড়িয়ে জমানত বাজেয়াপ্ত হয় তাঁর। আবারও বছর ঘুরতে না ঘুরতেই তিনি ফিরে আসেন তৃণমূলে। ২০১১ সালে ইসলামপুর থেকে জিতে রাজ্য মন্ত্রিসভায় গ্রন্থাগার মন্ত্রীর পদ পান। কিন্তু ২০১৬ সালে ইসালামপুরে কংগ্রেস প্রার্থী কনহাইয়ালাল আগরওয়ালের কাছে পরাজিত হন। কিন্তু সেই কনহাইয়ালাল তৃণমূলে যোগ দিয়ে ফের তৃণমূল ছেড়ে নিজের নতুন দল গড়েন। কিন্তু ২০১৯ সালে কনহাইয়ালাল তৃণমূলের লোকসভার প্রার্থী হলে ইসলামপুরের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন। সেই আসনের উপনির্বাচনে ফের দলের প্রার্থী হয়ে তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন হয় করিম চৌধুরীর। ২০২১ সালে জিতলেও তাঁকে মন্ত্রিসভায় নেওয়া হয়নি। সম্প্রতি বিধায়কদের দলের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন বিধানসভায় উপস্থিত হন না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলে বিতর্ক বাড়িয়েছিলেন তিনি। ইসলামপুরে দলীয় কোন্দলে এক সিভিক ভলান্টিয়ার খুনের ঘটনায় দলের একাংশের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন করিম চৌধুরী। আবার ইসলামপুর ব্লকের সভাপতির নাম ঘোষণা হওয়ার পরেও দল ছাড়ার হুমকিও দিয়েছিলেন। এ বার সরাসরি অভিষেকের জনসংযোগ যাত্রা বয়কট করে আবারও বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement