জীবনকৃষ্ণ সাহা। — ফাইল চিত্র।
নিয়োগ মামলার তদন্তে মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে সোমবার সিজিও কমপ্লেক্সে ডাকা হয়েছিল বলে খবর ছিল ইডি সূত্রে। কিন্তু সকালেই দেখা গেল তিনি ইডি দফতরে না গিয়ে যান বিধানসভায়। বিকেল নাগাদ সেখান থেকে বেরিয়ে যান। ইডি দফতরে তিনি যাবেন কি না, সেই প্রসঙ্গে জীবনকৃষ্ণ জানান, তাঁর কাছে যা নথি চাওয়া হয়েছিল, তা তিনি পাঠিয়ে দিয়েছেন ইডির কাছে।
সোমবার বিধানসভা অধিবেশনে যোগ দেন বড়ঞার বিধায়ক। পুরো অধিবেশনেই ছিলেন তিনি। তার পর বনমহোৎসব উপলক্ষে বিধানসভার উদ্যান উদ্বোধনের অনুষ্ঠানেও ছিলেন জীবনকৃষ্ণ। অনুষ্ঠান শেষে বেরিয়ে যান বিধানসভা থেকে। ইডির তলব প্রসঙ্গে তিনি জানান, তাঁকে ডাকা হয়নি। তাঁর কাছ থেকে কিছু নথি চাওয়া হয়েছিল। তা তিনি সিজিও কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগের তদন্তেই জীবনকৃষ্ণকে ডাকা হয়েছিল বলে ইডি সূত্রে খবর। এই মামলায় আগেই তাঁর স্ত্রী টগরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি। ইডির একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছিল, জীবনকৃষ্ণের স্ত্রীর সম্পত্তি নিয়ে ‘খোঁজখবরের’ সূত্রেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। নিয়োগ মামলায় বড়ঞার বিধায়কের নাম আগেই জড়িয়েছিল।
গত বছরের ১৪ এপ্রিল জীবনকৃষ্ণের কান্দির বাড়িতে টানা তল্লাশি চালিয়েছিল সিবিআই। চলেছিল তৃণমূল বিধায়ককে জিজ্ঞাসাবাদ। অভিযোগ, সেই জিজ্ঞাসাবাদ এবং তল্লাশির ফাঁকে তাঁর ব্যবহার করা দু’টি মোবাইল ফোন বাড়ির পিছনে পুকুরের জলে ফেলে দিয়েছিলেন জীবনকৃষ্ণ। জল থেকে জীবনের ফোন খুঁজে বার করতে বেগ পেতে হয় তদন্তকারীদের। তার পর ১৭ এপ্রিল মধ্যরাতে কলকাতা থেকে সিবিআইয়ের আরও একটি দল কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে জীবনকৃষ্ণের কান্দির বাড়িতে পৌঁছয়। গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। লোকসভা ভোটপর্বের মাঝে গত ১৪ মে প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি জীবনকৃষ্ণের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রায় ১৩ মাস পরে প্রেসিডেন্সি জেল থেকে জামিন পান বড়ঞার বিধায়ক।
সিবিআইয়ের মামলাতে জামিন পাওয়ার পরেই ইডি ‘বেআইনি লেনদেন’-এর বিষয়ে তৎপর হয়। জীবনকৃষ্ণের ‘পুকুরে ছুড়ে ফেলা মোবাইল’ থেকে যে তথ্য পুনরুদ্ধার করা হয়েছিল, তাতে ‘টাকা ফেরত’-এর প্রসঙ্গ রয়েছে বলে জানিয়েছিল সিবিআই। ফলে এই ঘটনার তদন্তে নামে ইডি। তার পরই নিয়োগ মামলায় ইডি তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিল বলে খবর। তবে সোমবার তিনি সিজিও কমপ্লেক্সে যাননি।