তোপ দাগলেন হুমায়ুন কবীর। — নিজস্ব চিত্র।
দিন কয়েক আগে মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের থানার ওসি রাজু মুখোপাধ্যায়ের অপসারণের দাবি তুলেছিলেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। এ বার সেই ‘দাবি’ আরও জোরালো করে তিনি তোপ দাগলেন মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার, ভরতপুরের ওসি রাজু মুখোপাধ্যায়, রেজিনগরের বিডিও অংশুমান দত্ত এবং ভরতপুর-১ ব্লকের বিডিও-র বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তিনি দরবার করবেন বলেও জানিয়েছেন হুমায়ুন। তাঁর হুঁশিয়ারি, সাত দিনের মধ্যে বিষয়টির সুরাহা না হলে তিনি নিজেই জানাবেন, কী ভাবে এঁদের ‘সোজা করতে’ হয়।
গত শনিবার থানার পাশে একটি জমিতে নির্মাণ ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ভরতপুর। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হুমায়ুনের নেতৃত্বে থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। এ নিয়ে ভরতপুর থানার ওসির অপসারণ দাবি করেছিলেন হুমায়ুন। সেই আঁচ ঠান্ডা হওয়ার আগেই আবার তোপ দাগলেন হুমায়ুন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী যেমন বলেছিলেন, ‘আব কি বার দোশো পার’ তেমন ভাবে ভরতপুরের ওসি রাজু মুখোপাধ্যায়ও বলেছিলেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসতে পারবেন না। তৃতীয় বারের জন্য সরকার গড়তে পারবে না। বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় আসবে। অনেক বার পুলিশ সুপারকে বলা হয়েছে। পুলিশ সুপার কোনও কর্ণপাত করেননি। বিডিওর বিরুদ্ধে আগের জেলাশাসককেও বলা হয়েছিল। উনিও কোনও কর্ণপাত করেননি। কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। বাকি আমি যেখানে বসবাস করি সেই রেজিনগরের বিডিও অংশুমান দত্ত, তাঁর মালদহে বাড়ি, এমন ভাবে বিডিওগিরি করেন যেন উনি স্থানীয় কোনও মস্তান। আমি বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছি। সাত দিনের মধ্যে সুরাহা না হলে আমিই খোলাখুলি জানাব কী করে এদের সোজা করতে হয়।’’
এর পর আনন্দবাজার অনলাইনকে হুমায়ুন আরও বলেন, ‘‘এ সবটাই হচ্ছে মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমারের অঙ্গুলিহেলনে। বিগত বিধানসভা ভোটে বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিতে যে পুলিশকর্মীরা সাহায্য করেছিলেন পুলিশ সুপার তাঁদের সঙ্গে নিয়ে পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিতে চাইছেন। আমি আজ বিধানসভায় যাচ্ছি। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে, এখানকার পুলিশের অভব্য আচরণ সম্পর্কে জানাব। এক জন শাসকদলের বিধায়ককে কী ভাবে এক জন ওসি এড়িয়ে যাওয়ার সাহস দেখান তার শেষ দেখে ছাড়ব।’’
সোমবার শুরু হয়েছে বিধানসভা অধিবেশন। বিধানসভায় হুমায়ুন জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে তিনটি চিঠি দেবেন তিনি। তাতে ওই পুলিশকর্তা এবং সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে বিজেপির সঙ্গে যোগসাজশ রাখা এবং দুর্নীতির অভিযোগের কথা তুলে ধরবেন তিনি।