শাস্তির মুখে পড়তে পারেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। ফাইল চিত্র
ভরতপুর থানার ওসি-কে হুমকি দিয়ে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের রোষানলে পড়তে পারেন বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। সূত্রের খবর, থানার আধিকারিককে হুমকি দেওয়ার কারণে তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছে কলকাতায়। সঙ্গে ডাকা হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী শাওনী সিংহ রায়কেও। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গঙ্গাসাগরে গিয়েছেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গিয়েছেন গোয়ায়। তাঁদের অনুপস্থিতিতে দলের এক শীর্ষ নেতা তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সঙ্গে হুমায়ুন কেন থানার ওসি-কে এ ভাবে হুমকি দিয়েছেন, তাও জানতে চাওয়া হবে। পাশাপাশি, হুমায়ুনকে দলের শাস্তির মুখেও পড়তে হতে পারে। দলীয় নেতৃত্বের তলবে কলকাতায় আসার কথা স্বীকার করে নিলেও, হুমায়ুন প্রসঙ্গে মুখ খুলতে চাননি জেলা সভানেত্রী শাওনী। তাঁর কথায়, ‘‘হুমায়ুনকে নিয়ে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার দলের রাজ্য নেতৃত্ব নেবে।’’ সূত্রের খবর, মমতা-অভিষেক কলকাতায় ফিরলেই হুমায়ুনকে নিয়ে দলীয় সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করা হবে।
সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের ভরতপুরে তৃণমূলের এক কর্মিসভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন ভরতপুর থানার ওসি রাজ মুখোপাধ্যায়কে হুমকি দেন। হুমায়ুন বলেন, ‘‘টারজানকে (হুমায়ুনের অনুগামী) ওসি ফোন করেছিল। আমি টারজানকে পরিষ্কার বলে দিয়েছি, যদি ভরতপুরের ওসি থাকার ইচ্ছে থাকে, ওসি-কে বলো দালালি বন্ধ করতে। আর তা না হলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এখান থেকে পাততাড়ি গোটাতে বাধ্য করব। থানার সামনে গিয়ে বসব টেবিলে পায়ের উপর পা দিয়ে। তখন ঠিক বুঝতে পারবে, হুমায়ুন কবীর কী জিনিস! অটোমেটিক তুমি ছেড়ে চলে যাবে।’’ কয়েক মাস আগেই রেজিনগরের তৃণমূল বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরীকেও প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি। তবে এ বার সরাসরি পুলিশ আধিকারিককে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি ভাল চোখে দেখছে না তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব।
উল্লেখ্য, ১৯৮২ সাল থেকে মুর্শিদাবাদে রাজনীতি করছেন হুমায়ুন। ২০১১ সালে রেজিনগর থেকে প্রথম বার বিধায়ক হন। তিন দশক কংগ্রেস করার পর অধীরের ছায়াসঙ্গী হুমায়ুন দল ছাড়েন ২০১২-য়। কিন্তু উপনির্বাচনে হেরে যান কংগ্রেস প্রার্থী রবিউলের কাছে। তার পর তৃণমূল ছেড়ে আবার ফেরেন কংগ্রেসে। ২০১৮ সালে দিল্লিতে কৈলাস বিজয়বর্গীয়র হাত ধরে বিজেপি-তে যোগ দেন হুমায়ুন। ২০১৯-এর লোকসভায় বিজেপি প্রার্থী হিসেবে মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে লড়াই করে পরাজিত হন। বিধানসভা ভোটের কয়েক মাস আগে আবার ‘ঘর ওয়াপসি’ হয় তাঁর। একুশের নীলবাড়ির লড়াইয়ে হুমায়ুন ভরতপুর থেকে তৃণমূলের টিকিটে লড়ে জেতেন। সেই থেকে একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করে দলের অস্বস্তি বাড়িয়ে চলেছেন হুমায়ুন।