সত্যজিৎ বিশ্বাস
দিন আগেই কয়েক সিপিএমের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যকে কিসান মান্ডিতে ধান বিক্রিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এ বার সরস্বতী পুজোর চাঁদার জন্য লরি ধাওয়া করে গিয়ে চালক-খালাসিকে নামিয়ে পেটানোর অভিযোগ উঠল কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের ঘনিষ্ঠ ক্লাবের বিরুদ্ধে।
একটু-আধটু ধাওয়া নয়, টানা ছ’কিলোমিটার। তা-ও মাত্র দশ টাকার জন্য! বৃহস্পতিবার দুপুরের ঘটনা। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই ‘আমরা সবাই’ ক্লাব নদিয়ার হাঁসখালি থানার ফুলবাড়ি এলাকার মজিদপুরে। সেখান থেকে গাড়ি ও মোটরবাইকে তাড়া করে কোতোয়ালি থানার ভূতপাড়াতে এসে লরির রাস্তা আটকান কয়েক জন। শুধু মারধর নয়, লরি ভাঙচুরও করা হয়।
ঘটনার পরেই দুপুর দেড়টা থেকে হাঁসখালি-কৃষ্ণনগর রাস্তা অবরোধ করেন ভূতপাড়ার বাসিন্দারা। পুলিশ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে বেলা ৩টে নাগাদ অবরোধ ওঠে। আহত চালক মকলেসুর রহমান ও খালাসি নাজমুল শেখকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান এলাকার মানুষই। তাঁদের বাড়ি কালিগঞ্জের জানকীনগরে। রাতে তাঁরা পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন দুপুর একটা নাগাদ ফুলবাড়ি মোড়ে রাস্তা আটকে চাঁদা আদায় করছিল ‘আমরা সবাই’ ক্লাবের কিছু সদস্য। দত্তফুলিয়ায় পাথর পৌঁছে দিয়ে ওই রাস্তায় ফিরছিল লরিটি। পথ আটকে ২০ টাকার রসিদ কেটে চালককে ধরিয়ে দেন ক্লাবের কিছু লোকজন। চালক ১০ টাকা দিতে গেলে গোলমাল বেধে যায়।
মকলেসুরের অভিযোগ, ‘‘লরিতে উঠে ওরা আমায় কিল-ঘুষি মারে, হাত টেনে ধরে রাখে। মারের ভয়ে কোনও রকমে পালিয়ে আসি। কিন্তু ৬-৭টি মোটরবাইক ও একটি গাড়িতে ওরা আমাদের তাড়া করে। ভূতপাড়া মোড়ে লরি আটকে কাচ ভেঙে দেয়। ইট-রড-লাঠি দিয়ে আমাদের বেধড়ক পেটায়। এলাকার লোক রুখে উঠলে ওরা পিছু হটে।’’
তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস অবশ্য দাবি করেন, ওই ক্লাবের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওই এলাকার অধিকাংশ লোক তৃণমূল সমর্থক। ফলে ক্লাবের সদস্যদের মধ্যেও আমাদের কর্মী থাকতেই পারে। কিন্তু দল কোনও ভাবেই যুক্ত নয়। আমি ওই ক্লাবের সদস্যও নই।’’ তবে ক্লাবের ছেলেদের আড়াল করার চেষ্টাতেও তিনি কসুর করেননি। বিধায়কের দাবি, ‘‘শুনেছি, চাঁদা আদায়ের জন্য লরিতে ক্লাবের দু’জন উঠেছিল। চালক তাদের নিয়েই চলে যাচ্ছিল। এক জন পড়ে আহত হয়েছে। সম্ভবত তার জেরেই এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা।’’