মুর্শিদাবাদ জেলার রঘুনাথগঞ্জের বিধায়ক আখরুজ্জামান
রাজ্যের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী মুর্শিদাবাদ জেলার রঘুনাথগঞ্জের বিধায়ক আখরুজ্জামান তাঁর জেলা দিয়ে গরুপাচারের বিষয়ে জানিয়েছিলেন সিবিআই তাঁকে ডাকলে এই বিষয়ে যা জানেন সব বলবেন। মঙ্গলবার আরও একধাপ এগিয়ে তিনি নিশানা করলেন তৃণমূল থেকে অন্য দলে চলে যাওয়া নেতার দিকে। তিনি বলেন, ‘‘সে সময়ে জেলা তৃণমূলের দায়িত্বে যিনি ছিলেন, তাঁর সম্মতি ছাড়া গাছের একটা পাতাও হেলত না। তিনি এখন অন্য দলে।’’
আখরুজ্জামান আগেই বলেছিলেন, ২০১৫ সালে কংগ্রেসের বিধায়ক থাকাকালীন তাঁদের এলাকা দিয়ে গরুপাচারের বিষয়ে বিস্তারিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছিলেন। পরে আখরুজ্জামান তৃণমূলে আসেন। এবং জেলায় তৃণমূলের তৎকালীন দলীয় পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে কাজও করেন। এহেন ব্যক্তি যখন ‘অন্য দলে’ চলে যাওয়া কারও প্রতি ইঙ্গিত করায় বিষয়টি রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে কারণ আখরুজ্জামানের বক্তব্য অনুযায়ী, এই গরু পাচারের প্রক্রিয়ার সঙ্গে ‘সে সময় জেলা তৃণমূলের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি’কেও তিনি নিশানা করছেন।
এই দাবির সমর্থনে মুখ খুলেছেন উত্তর মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা সাংসদ খলিলুর রহমানও। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টা মিথ্যে বলেননি আখরুজ্জামান। তিনিই তখন ছিলেন মুর্শিদাবাদে দলের শেষ কথা। তাই পরিস্থিতির দায় এড়াতে পারেন না তিনিও।’’
ঘটনাচক্রে সেই সময় মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু এখন বিজেপিতে। এবং বিরোধী দলনেতাও। তাঁর সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি। তবে তাঁর বাবা, সাংসদ শিশির অধিকারী বলেন, ‘‘এ সব অভিযোগ কারা করছেন? স্থানীয় নেতারা তো? তাঁদের কে চেনে? তাঁদের কথার তাই কোনও দাম নেই।’’
রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘চিঠির কথা জানি। আমিও তখন বিধায়ক। সেই সময় ওঁর স্বগতোক্তি ছিল, আমি চিঠি দেওয়ার পরে পাচার আরও বেড়ে গিয়েছে।’’
আখরুজ্জামানকে সমর্থন করে তৃণমূলের উত্তর মুর্শিদাবাদের সাংগঠনিক সভাপতি খলিলুর রহমানের বক্তব্য, ‘‘বিষয়টা মিথ্যে বলেননি আখরুজ্জামান। তিনিই তখন ছিলেন মুর্শিদাবাদে দলের শেষ কথা। তাই পরিস্থিতির দায় এড়াতে পারেন না তিনিও।’’ শুভেন্দুর হাত ধরে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা সুতি ২ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সহ সভাপতি মাসিদুল হক পিকু বলেন, ‘‘সুতির পথ ধরে গরু পাচার হয়েছে প্রকাশ্যে। জেলায় এই পাচারে একজন বিশেষ কাউকে দায়ী করা যায় না।’’