তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে ব্রাত্য বসু নিজস্ব চিত্র
গুজরাতের থেকে অনেক বেশি উন্নত পশ্চিমবঙ্গ। গুজরাতের উন্নয়ন নিয়ে যে কথা বলছে বিজেপি, তা প্রকৃত চিত্র নয়। বিজেপি-কে কটাক্ষ করে এমনটাই দাবি করলেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। শুক্রবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে ব্রাত্য দাবি করেন, ‘‘উন্নয়ন নিয়ে গুজরাত সম্বন্ধে যা বলা হচ্ছে তা একেবারেই মিথ্যা। উন্নয়নের মাপকাঠিতে বাংলা অনেক বেশি উন্নত গুজরাতের থেকে।’’
বঙ্গ সফরে এসে একাধিকবার সোনার বাংলা গড়ার ডাক দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ক্ষমতায় এলে বিজেপি কী করবে, তার ফিরিস্তিও দেন তিনি। তৃণমূলের দাবি, বাংলার জন্য বিজেপি যা করবে বলছে, তা গুজরাতেও করতে পারেনি। ব্রাত্যের কথায়, ‘‘গুজরাতে ভোটের সময় এক কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি। তা তারা পূরণ করতে পারেনি। কর্মসংস্থানের দিক থেকে বাংলা অনেক এগিয়ে। বাংলায় বেকারত্বের হার ৪০ শতাংশ কমেছে।’’
বৃহস্পতিবার নামখানার সভায় অমিত ক্ষমতায় এলে রাজ্যে সপ্তম বেতন কমিশন চালুর প্রতিশ্রুতি দেন। অমিতের ওই প্রতিশ্রুতিকে কেন্দ্র করে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। তৃণমূলের প্রশ্ন, অমিত যে রাজ্য থেকে এসেছেন সেখানকার চাকরিজীবীদের অবস্থা কী তিনি জানেন? তাঁরা কি ঠিকমতো পেনশন পাচ্ছেন? এ নিয়ে ব্রাত্য জানান, গুজরাতে পার্শ্বশিক্ষকদের কথা ছাড়ুন, স্থায়ী শিক্ষকরাই নিয়মিত বেতন পান না। পেনশন নিয়েও চরম টালবাহানা চলে সেখানে। একইসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, ‘‘বাম আমলে সিনেমায় যেমন দুর্নীতি পরায়ণ পুলিশ অফিসার দেখা যেত। ঠিক তেমনই গুজরাতের প্রতিটি স্থানীয় সিনেমায় দেখা যায় শিক্ষকরা পেনশন পাচ্ছেন না। অর্থাৎ সেখানকার শিক্ষকদের অবস্থা সিনেমাতেও পাবেন।’’
গুজরাতে হাজার হাজার আদিবাসী, মৎস্যজীবীকে উন্নয়নের নামে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে বলেও দাবি করেন ব্রাত্য। বলেন, ‘‘গুজরাতের উন্নয়ন নিয়ে এত কথা বলে বিজেপি, অথচ সেখানে ৪০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাস করেন। কয়েক হাজার আদিবাসী, মৎস্যজীবী মানুষকে উন্নয়নের নামে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে। গুজরাতে ৯৪ শতাংশ শ্রমিক দেশের মধ্যে সবথেকে কম মজুরি পান।’’ একইসঙ্গে তিনি দাবি করেন, ‘‘শিক্ষা খাতে মূল আয়ের ৫ থেকে ৬ শতাংশ ব্যবহার করা উচিত। ১০ বছরে গুজরাতে শিক্ষা খাতে খরচ হয়েছে মাত্র ২ শতাংশ। সেখানে ৪৫ শতাংশ মানুষ নিরক্ষর। তাঁদের সর্বোচ্চ পড়াশোনা পঞ্চম শ্রেণি। তাই গুজরাতের দিকে বিজেপি-র সবার আগে নজর দেওয়া উচিত।’’ এ ছাড়া গুজরাতের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং নারী সুরক্ষা ও তাঁদের জন্য সংরক্ষণ নিয়েও সমালোচনা করেন ব্রাত্য।