—ফাইল চিত্র
দ্বিখণ্ডিত মতুয়া শিবিরকে একজোট করে নিজেদের পক্ষে টানার চেষ্টা শুরু করল তৃণমূল।
শুক্রবার মতুয়া দলপতি, পাগল গোঁসাইদের (মতুয়া সমাজের মাথা) বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত তিনটি জায়গায় বৈঠক করেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রী-সাংসদেরা। সেই মঞ্চ থেকে সরাসরিই আসন্ন বিধানসভা ভোটে তৃণমূলকে সমর্থন জানানোর আহ্বান জানান দলের নেতারা। সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‘আপনারা যাঁরা চলে গিয়েছিলেন, সেই সব মতুয়া দলপতিদের কাছে হাতজোড় করে প্রার্থনা করছি, আপনারা ফিরে আসুন।’’ গাঁড়াপোতায় ওই সভায় সৌগত ছাড়াও হাজির ছিলেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, ব্রাত্য বসু, বিধায়ক নির্মল ঘোষ, জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর গোপাল শেঠ প্রমুখ। বাগদা বিধানসভা কেন্দ্রের মতুয়া দলপতি, গোঁসাইরা এসেছিলেন। সৌগত তাঁদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘মতুয়াদের আশীর্বাদ ছাড়া বাংলার সব কাজ আমরা করতে পারব না।’’ জ্যোতিপ্রিয় তাঁর বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মতুয়াদের বড়মা, প্রয়াত বীণাপানিদেবীর ঘনিষ্ঠতার কথা উল্লেখ করেন। এ দিন সভায় মতুয়াদের মধ্যে যাঁরা এসেছিলেন, অনেকেই স্থানীয় ভাবে তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
গত লোকসভা ভোটে মতুয়া সমাজের একটা বড় অংশ বিজেপির শান্তনু ঠাকুরের পাশে দাঁড়িয়েছিল। ভোটে জেতেন শান্তনু। গত কয়েক মাসে নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করা নিয়ে মতুয়াদের মধ্যে ফের ফাটল স্পষ্ট হচ্ছে। এক দিকে, শান্তনুর দাবি, নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করা হোক। না হলে অন্তত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গাইঘাটায় এসে আইন কার্যকর করা নিয়ে কেন্দ্রের অবস্থান স্পষ্ট করুন। অন্য দিকে, তৃণমূল শিবির বরাবরই বলে আসছে, সিএএ-র মাধ্যমে নয়, মতুয়ারা যেহেতু ভোট দেন, ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড আছে, তাঁরা ইতিমধ্যেই নাগরিক। তাঁদের নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দিতে হবে।
সৌগত অমিত শাহক কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘ওঁরা এক একজনের বাড়িতে এসে খাবেন। কিন্তু ওঁরা আপনাদের পাশে থাকবেন না। তৃণমূলই তিনশো পঁয়ষট্টি দিন মানুষের পাশে থাকে।’’ সৌগত বলেন, ‘‘অতিমারির মধ্যে সরকারের কাজ চলছে। শুধু নাগরিকত্ব আইনের রুল নাকি করা যায়নি।’’ মতুয়া-মন পেতে তৃণমূলের চেষ্টাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না শান্তনু। তিনি বলেন, ‘‘সৌগতবাবুর কথা বনগাঁ লোকসভার জনতার মধ্যে প্রভাব ফেলবে না।’’