দাঁতনে সভা তৃণমূলের। নিজস্ব চিত্র।
রবিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনে পদযাত্রা ও সভা করেছিলেন সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া শুভেন্দু অধিকারী। সেই সভার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সোমবার পাল্টা সভা করল তৃণমূল। শুভেন্দু যেখানে সভা করেছিলেন সেই সরাইবাজার এলাকাতেই হল সমাবেশ। আর সেখান থেকে নাম না করেও প্রতি লাইনে লাইনে শুভেন্দুকে আক্রমণ করলেন জেলার নেতারা।
সোমবার ওই সভায় তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি ছাড়াও হাজির ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ হাজরা, দাঁতনের বিধায়ক বিক্রম প্রধান, দলের জেলা চেয়ারম্যান দীনেন রায়। এ ছাড়াও ছিলেন রাজ্য তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য। দাঁতন ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস আয়োজিত সভার আগে সোমবার কালীচন্ডী এলাকা থেকে মিছিল শুরু হয়। এর পরে সভা হয় সরাইবাজার এলাকায়।
তবে এটাকে শুভেন্দুর পাল্টা সমাবেশ বলতে রাজি নয় তৃণমূল। এই প্রসঙ্গে দেবাংশু বলেন, "পাল্টা সভা করার কোনও প্রয়োজন নেই আমাদের। রাজ্য ও জেলা জুড়ে যে 'বঙ্গধ্বনী' কর্মসূচি চলছে তারই অঙ্গ এই সভা। এদিনের সভায় ভিড় এবং উচ্ছ্বাস সকলে দেখতে পেয়েছেন।" একই সঙ্গে শুভেন্দুকে আক্রমণও করেন দেবাংশু। বিভিন্ন জনসভায় শুভেন্দু বলেছেন, দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলা মিলিয়ে মোট ৩৫টা আসনেই জিতবে বিজেপি। সেই প্রসঙ্গে দেবাংশু বলেন, "যাঁরা অবিভক্ত মেদিনীপুরের ৩৫টা আসন পাওয়ার কথা বলছেন তাঁদের টেনেটুনে ৫টা আসন পাওয়া খুব কষ্টের হবে।"
আরও পড়ুন: অমর্ত্যকে নিয়ে সঙ্ঘাতের জের? বিশ্বভারতীকে দেওয়া রাস্তা ফিরিয়ে নিলেন মমতা
শুভেন্দুর পাল্টা সভা বলে মানতে রাজি না হলেও সোমবার দেবাংশুর মুখে বারবার চলে আসে নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়কের কথা। তিনি বলেন, "শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের প্রাক্তন নেতা। তিনি যদি এখন তৃণমূল সম্পর্কে মিথ্যা প্রচার করেন সেটা তাঁর ব্যাপার। আসলে বিজেপির মুখ কে হবেন সেটা ওরা এখনও ঠিক করতে পারেনি। ওরা আমাদের নেত্রীকে আক্রমণ করছে। আমরা তার জবাব দিচ্ছি।" একই সঙ্গে তিনি বলেন, শুধু আসন পাওয়া নয়, গত বারের থেকে কত বেশি পাবে সেটাই তৃণমূলের লক্ষ্য।
আরও পড়ুন: ‘আমরা স্যরের অনুগামী’, মাস্টারমশাইয়ের সমর্থনে এ বার পোস্টার সিঙ্গুর জুড়ে
জেলা সভাপতি অজিত মাইতিও সোমবার বক্তব্যে বারবার আক্রমণাত্মক হয়েছেন শুভেন্দু প্রসঙ্গে। তিনি বলেন, "গতকাল দাঁতনে উনি যে সভা করেছিলেন তাতে দুই জেলা থেকে লোক এনেও ৫ হাজারের বেশি মানুষের সমাবেশ করতে পারেননি। ফ্লপ সভা হয়েছে। আমরা ওকে শিক্ষা দেব, শিক্ষা। বেইমানরা এই জেলায় থাকে না। বিদ্যাসাগর, প্রফুল্ল চাকির এই জেলায় বেইমানদের ঠাঁই নেই। নিজে বাঁচার জন্য ক্ষুদিরামের নাম নিচ্ছে। আর একজন বহিরাগতর পায়ে হাত দিয়ে ক্ষমা চেয়ে বলছে, আমাকে জেলে পাঠিও না। এই দ্বিচারিতার মুখোশ আমরা খুলে দেবো।" এমন আক্রমণের পাশাপাশি অজিত জানান, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় দলের যুব সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একটি সভা করবেন।