কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
সামনেই রামমন্দিরের উদ্বোধন। সেই অনুষ্ঠানের উদ্যাপনে দেশ জুড়ে তোড়জোড় শুরু করেছে বিজেপি। এর মধ্যে ‘সকলের আরাধ্য’ রামকে রাজনীতিতে টেনে আনার জন্য গেরুয়া শিবিরকে দুষলেন রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘রামের পুজো আমরা সবাই করি। বিজেপি রাজনীতিতে রামকে এনে কলুষিত করছে।’’ একই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘রাম বা মা কালী আমাদের খেতে দেন না। আমাদের পরিশ্রম করে খেতে হয়।’’ বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, ধর্ম নিয়ে তৃণমূলই রাজনীতি করে। তবে একই অভিযোগে তৃণমূল-বিজেপি দু’জলকেই বিঁধেছেন বিরোধী অন্য দলের নেতারা।
মঙ্গলবার বারাসত ১ বিডিও অফিসের সভাকক্ষে সরকারি প্রকল্পের পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে এসে এ কথা বলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব। সেখানে ছিলেন আর এক মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘‘রাম আমাদের আবেগ। তবে রাম খেতে দেন না। কালীও আমাদের সরাসরি খেতে দেন না। আমাদের সকলকে পরিশ্রম করেই খেতে হয়।’’
বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি তুহিন মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘দুর্গাপুজোয় ক্লাবকে টাকা দেওয়া বা বিসর্জনের কার্নিভালের মতো বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারি কোষাগার থেকে টাকা দেন। ফলে এই পরামর্শ শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীকে দিন। তৃণমূল ধর্মে নেই, দুর্নীতিতে আছে।’’
ধর্ম নিয়ে রাজনীতির বিরোধিতায় মুখ খুলেছে সিপিএম। দলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আহমেদ আলি খান বলেন, ‘‘বিজেপি-তৃণমূল দু’টো দলই ধর্মের নামে রাজনীতি করছে। বিজেপি রামমন্দির করছে। তৃণমূল এখানে জগন্নাথ মন্দির করছে।’’ তাঁর অভিযোগ, ওয়াকফ বোর্ডের টাকা ইমামদের দিচ্ছে তৃণমূল সরকার। সরকারি টাকা দিয়ে মন্দির গড়ছে। মেরুকরণের রাজনীতিই তাদের পুঁজি।
হুগলির ফুরফুরায় ধর্মীয় পরিবারের সন্তান নওসাদ সিদ্দিকী গত বিধানসভা ভোটে আইএসএফের টিকিটে ভাঙড় থেকে জিতেছেন। তিনি অবশ্য রাজনুীতি থেকে ধর্মকে আলাদা রাখারই পক্ষপাতী। নওসাদ বলেন, ‘‘আমরা যে লক্ষ্যে রাজনীতি করতে এসেছি, সেটা করতে না পারায় ধর্মকে রাজনীতির মাঠে টেনে আনছি। ধর্ম পালন ও রাজনীতি এক নয়। মানুষের সেবা করতে ব্যর্থ হয়ে কেউ রামের নাম, কেউ রহিমের নামে বলছেন। রাজনীতিতে এ সব না আনাই ভাল।’’