ব্যারাকপুরের বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত। —ফাইল চিত্র
আগামী বিধানসভা ভোটে আর তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়াবেন না বলে ঘোষণা করেছিলেন। সেই শীলভদ্র দত্তর তৃণমূল ছাড়া নিয়ে জল্পনা তীব্র। তার মধ্যেই দলের ‘ঋণ’ শোধ করতে শুরু করলেন শীলভদ্র দত্ত।
কীসের ঋণ? ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে লিভার প্রতিস্থাপন হয় ব্যারাকপুরের বিধায়ক শীলভদ্রর। সেই চিকিৎসায় বিপুল খরচ হয়েছিল। সেই ব্যয়ভার মেটাতে তৃণমূলের বিভিন্ন নেতার কাছ থেকে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা ধার নেন শীলভদ্র। সেই টাকাই এ বার ফেরত দিতে শুরু করেছেন শীলভদ্র।
বৃহস্পতিবার ব্যারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান উত্তম দাসকে ২ লক্ষ টাকা ফেরতও দিয়েছেন। প্রথমে উত্তম দাসের নামে দু’লক্ষ টাকার চেক পাঠান শীলভদ্র। কিন্তু উত্তম নগদ নিতে চান। পরে বিধায়ক নিজে টাকা তুলে ক্যাশ টাকা উত্তমকে পাঠিয়ে দেন। উত্তম বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত কারণে ওঁকে টাকা ধার দিয়েছিলাম। উনি ফেরত দিয়েছেন। এটা সংবাদমাধ্যমে আসার মতো বিষয় নয়।’’
বাকি পাওনাদারদের মধ্যে রয়েছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, পার্থ ভৌমিক, নারায়ণ গোস্বামীদের মতো নেতা। তাঁদের সবার টাকাই ফেরত দিয়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন শীলভদ্র। ইতিমধ্যেই তাঁদের ফোনও করেছেন। টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে তৃণমূলের নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিককে ফোন করেছিলেন। শীলভদ্রর দাবি, ওই টাকা আর ফেরত নিতে চান না পার্থ। যদিও পার্থবাবু এ নিয়ে কিছু বলতে চাননি।
তৃণমূলের ‘বিক্ষুব্ধ’দের মধ্যে কার্যত প্রথম সারিতে ছিলেন শীলভদ্র। প্রশান্ত কিশোরের ভূমিকায় সরাসরি প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। পাশাপাশি স্পষ্ট ঘোষণা করেছিলেন, এ বার তৃণমূলের টিকিটে আর ভোটে লড়বেন না তিনি। তার পর থেকে গত কয়েক দিনে তাঁর দলত্যাগ বা বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা আরও জোরালো হয়েছে। খাদ্যমন্ত্রী দেখা করতে গিয়ে ব্যর্থ হন। গোপালনগরে মুখ্যন্ত্রীর সভায় তাঁকে দেখা যায়নি। তারপর মুকুল রায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন শীল ভদ্র। যদিও তিনি মুকুলের বাড়িতে যাওয়া এড়িয়ে গিয়েছেন। সব মিলিয়ে রাজনৈতিক মহলে অনুমান করা হচ্ছে যে, শীলভদ্র দত্তর এখন বিজেপিতে যোগদান শুধু সময়ের অপেক্ষা।
কিন্তু তৃণমূলের একটা মহল থেকে শীলভদ্রর সেই সময়ের চিকিৎসা নিয়ে আক্রমণ করা হয়। দলের নেতারা চিকিৎসার টাকা দিয়েছেন, আর সেই দলই ছেড়ে দিচ্ছেন— এমন কটাক্ষও শুনতে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু দল ছাড়লে যাতে আর সেই খোঁচা কেউ দিতে না পারেন বা তাঁকে শুনতে না হয়, সেই কারণেই টাকা ফেরাচ্ছেন বলে ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন শীলভদ্র।