২০২৪ সালের নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘খেলা ঘুরিয়ে দেবেন’ বলেও মন্তব্য করেছেন শত্রুঘ্ন সিংহ। পাশাপাশি রাহুলের প্রশংসা করেছেন। ফাইল চিত্র।
আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে রুখতে কংগ্রেসের সঙ্গে ‘হাত’ মেলাতেই পারে তৃণমূল। রবিবার কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধীর ভূয়সী প্রশংসা করে এমন মন্তব্যই করলেন আসানসোলের তৃণমূল সাংসদ শত্রুঘ্ন সিংহ। সনিয়া পুত্রের তারিফ করে শত্রুঘ্ন বললেন, ‘‘রাহুলের ক্যারিশমা কাজ করতে শুরু করেছে।’’
বছর দু’য়েক বাদে লোকসভা নির্বাচন। ২০২৪ সালের নির্বাচনে মোদী বাহিনীকে হঠাতে বিরোধী ঐক্য তৈরির চেষ্টা চলছে রাজনীতির আঙিনায়। এই প্রেক্ষাপটে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব প্রকট হয়েছে গত কয়েক মাসে। বিভিন্ন রাজ্যে কংগ্রেসের একাধিক নেতারা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। যা মোটেই ভাল চোখে দেখেনি কংগ্রেস শিবির। বাংলাতেও কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব রেখেই চলে তৃণমূল। অন্য দিকে, এখন অনেকটাই কাছাকাছি কংগ্রেস এবং সিপিএম। জাতীয় স্তরেও কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতেও দেখা গিয়েছে তৃণমূলকে। বিজেপি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার ক্ষমতা কংগ্রেসের নেই বলেও সরব হয়েছেন তৃণমূল নেতারা। ফলে দুই দলের মধ্যে সম্পর্কে যেখানে ‘শৈত্যপ্রবাহ’ চলছে, সেই প্রেক্ষাপটে রাহুলের প্রশংসা করে যে বন্ধুত্বের বার্তা দিলেন শত্রুঘ্ন, তা রাজনৈতিক দিক থেকে আলাদা তাৎপর্য পেয়েছে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শত্রুঘ্ন আশাপ্রকাশ করেছেন যে, আগামী দিনে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের সম্পর্কের উন্নতি হবে। তাঁর কথায়, ‘‘আজ সম্পর্ক ভাল নয় বলে, আগামীকাল যে ভাল হবে না, তার কোনও মানে নেই। আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি যে, বড় বিরোধী দলগুলি যদি একজোট হয়, তা হলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পুরো অন্যরকম হবে।’’ ২০২৪ সালের নির্বাচনে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘খেলা ঘুরিয়ে দেবেন’ বলেও মন্তব্য করেছেন তৃণমূল সাংসদ।
অন্য দিকে, রাহুলের তারিফ করে ওই সাক্ষাৎকারে শত্রুঘ্ন বলেছেন, ‘‘কংগ্রেসের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ ভাল সাড়া ফেলেছে। রাহুল গান্ধীর ক্যারিশমা কাজ করতে শুরু করেছে। আমার মনে হয়, রাহুলের এই কর্মসূচিতে আগামী লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস দ্বিগুণ আসন পাবে।’’ প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ৫২টি আসনে জিতেছিল।
কংগ্রেসের অন্দরে যেখানে রাহুলের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল, সেই নেতৃত্ব নিয়েই রাগার প্রশংসাও শোনা গিয়েছে শত্রুঘ্নের গলায়। তিনি বলেছেন, ‘‘লক্ষ লক্ষ মানুষ রাহুলকে সমর্থন জানাচ্ছে। উনি ওঁর নেতৃত্বদানের ক্ষমতা প্রমাণ করে দিয়েছেন। রাহুলকে নেতা হিসাবে গ্রহণ করেছে মানুষ।’’ এই প্রসঙ্গে বিজেপিকে বিঁধে শত্রুঘ্ন এও বলেছেন, ‘‘যাঁরা ওঁকে ‘পাপ্পু’ বলে ঠাট্টা করতেন, তাঁরা ভুল প্রমাণিত হলেন।’’
প্রসঙ্গত, অতীতে বিজেপিতে ছিলেন বলিউডের এই অভিনেতা। ২০১৯ সালে কংগ্রেসে যোগ দেন। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন ‘বিহারিবাবু’। পরে আসানসোল লোকসভা আসন থেকে উপনির্বাচনে জোড়াফুল প্রতীকে লড়ে জয়ী হন।
সম্প্রতি আসানসোলে শত্রুঘ্নের নামে নিখোঁজ পোস্টার দেখা গিয়েছে। এ নিয়েও মুখ খুলেছেন শত্রুঘ্ন। তিনি বলেছেন, ‘‘উপনির্বাচনে যাঁরা পরাজয় হজম করতে পারেননি, তাঁরাই এর নেপথ্যে রয়েছেন। দুর্গাপুজোর সময় আমি আমার কেন্দ্রে ছিলাম। গত সপ্তাহেও ছিলাম। ছটপুজোতেও থাকছি আসানসোলে। ফলে নিয়মিত যাই এলাকায়।’’