সুকান্ত মজুমদার এবং কুণাল ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
মণিপুরের নারী নির্যাতনের পরে এ বার পাকিস্তান এবং পুলওয়ামা নিয়ে তরজায় বিজেপি এবং তৃণমূল। ‘উপলক্ষ’ শুক্রবার তৃণমূলের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি মন্তব্য। ২১ জুলাইয়ের ওই সভায় তৃণমূল নেত্রী বলেছিলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি বাজারে ভুয়ো ভিডিয়ো ছাড়তে পারে।’’ সে প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে যে ভাবে বিজেপি পুলওয়ামার জঙ্গি হানার ঘটনাকে রাজনৈতিক প্রচারের হাতিয়ার করেছিল, এ বারও তেমন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মমতার ওই বক্তব্যের জবাবে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য পাকিস্তানের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।’’ সেই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে কি মুখ্যমন্ত্রীর কোনও যোগাযোগ রয়েছে? বিষয়টি তদন্ত করে দেখা প্রয়োজন।’’ পুলওয়ামা নিয়ে এমন মন্তব্য দেশদ্রোহিতা কি না, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলেও দাবি তুলেছেন সুকান্ত। তাঁর ওই মন্তব্যের জবাবে কুণাল টুইটারে লিখেছেন, ‘‘বিজেপি ভুলে যায় সরকারের বিরোধিতা মানেই দেশদ্রোহিতা নয়।’’
২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় সিআরপিএফের কনভয়ে জঙ্গিহানার ঘটনা প্রসঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরের তৎকালীন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের সাম্প্রতিক মন্তব্যও এসেছে কুণালের টুইটে। তিনি লিখেছেন, ‘‘জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক জানিয়েছেন, জঙ্গি হামলার আশঙ্কা সত্ত্বেও সিআরপিএফ কর্মীদের বিমান না দিয়ে এবং সড়কপথে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যদি তাদের বিমানের ব্যবস্থা করতেন, তা হলে ওই ৪০ জন জওয়ান আজ বেঁচে থাকতে পারতেন। বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার চাইলে পুলওয়ামার ঘটনা এড়ানো যেত। কেন্দ্রের অবহেলাতেই পুলওয়ামার ঘটনা ঘটেছে।’’
এর পরেই মোদী-অমিত শাহদের নিশানা করে কুণালের মন্তব্য, ‘‘২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজনৈতিক সুবিধা পাওয়ার জন্য তারা লজ্জাজনক ভাবে ওই সিআরপিএফ কর্মীদের মৃত্যুকে কাজে লাগিয়েছিল!’’ প্রসঙ্গত, বিজেপি নেতা সত্যপাল মালিক মোদী জমানায় জম্মু-কাশ্মীর-সহ চারটি রাজ্যের রাজ্যপালের পদে থাকা সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিযোগ তুলেছেন, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে পুলওয়ামায় সিআরপিএফের কনভয়ে জঙ্গি হানায় ৪০ জন জওয়ানের মৃত্যুর পরে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে মুখ বন্ধ রাখতে বলেছিলেন। কারণ, সে ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের গাফিলতি স্পষ্ট হয়ে যেত। সে বার লোকসভা ভোটে বিজেপি পুলওয়ামাকাণ্ডকে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করেছিল বলেও অভিযোগ করেন মালিক।