অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া নোট। — নিজস্ব চিত্র।
অপরাধ প্রমাণিত না হলে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাশেই রয়েছে দল। শনিবার তাঁকে গ্রেফতারের পর, সাংবাদিক সম্মেলন করে বার্তা দিয়েছিল তৃণমূল। ‘পার্থ-ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে যে ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা উদ্ধারের পর মন্ত্রীকে গ্রেফতার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি), সেই টাকা নিয়ে রবিবার নতুন প্রশ্ন উত্থাপন করলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। বললেন, “নোটবন্দির পর অত টাকা এল কী ভাবে? টাকার উৎস কী? যে সময়ের দুর্নীতির কথা বলা হল, নোটগুলি যে সময়ের, তা মিলছে, কি মিলছে না, তা তদন্ত করে দেখা হোক। যে নোট উদ্ধার হয়েছে, সেগুলো নোটবন্দির পরের নোট। ২০১৪-১৫ সালের কেলেঙ্কারি যদি বলা হয়, তার পর নোটবন্দি হয়েছে। তা হলে এই নোট এল কী ভাবে? কেউ কেলেঙ্কারি নিয়ে প্রশ্ন করলে, এই প্রশ্ন উঠতে বাধ্য।’’
কুণাল রবিবার আবার বলেন, যাঁর বাড়ি থেকে টাকা মিলেছে, সেই অর্পিতার সঙ্গে তাঁদের দলের কোনও যোগ নেই। কুণালের কথায়, “যে ভদ্রমহিলার বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধার হয়েছে, যা আমরা ইডি সূত্রে জানতে পেরেছি, তিনি তৃণমূলের কেউ নন।’’ একই সঙ্গে বলেন, “তৃণমূল নির্দিষ্ট ভাবে বলে দিচ্ছে, যাঁদের নাম এসেছে, যাঁদের থেকে টাকা মিলেছে, তাঁরাই বলতে পারবেন। এই নিয়ে বলার দায়িত্ব তাঁদের বা তাঁদের আইনজীবীদের। আমরা দায়িত্ব নিয়ে বলছি, তৃণমূলের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। তৃণমূল কাউকে অন্যায় করতে বলেনি।’’
পার্থ প্রসঙ্গে শনিবারের সাংবাদিক সম্মেলনে বলা কথারই পুনরাবৃত্তি করেন কুণাল। বলেন, ‘‘আইন আইনের পথেই চলবে। তৃণমূল রাজনৈতিক পথে জড়াবে না।... আদালতে যদি তদন্তকারীরা এমন কোনও তথ্য প্রমাণ দেন এবং আদালত যদি সেই তথ্য প্রমাণকে মান্যতা দেয়, তা হলে যত বড় নেতাই হোন, তৃণমূল কংগ্রেস ও সরকার তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’’ তাঁর কথায় আবারও স্পষ্ট, আদালতে দোষী প্রমাণিত না হলে পার্থের বিরুদ্ধে দল বা সরকারের তরফ থেকে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে না তৃণমূল।
রবিবারও দ্রুত তদন্ত শেষ করার উপর জোর দেন কুণাল। বলেন, ‘‘আমরা টাইম বাউন্ড ইনভেস্টিগেশন চাই। এর আগে কেন্দ্রীয় সংস্থার একাধিক তদন্ত দেখেছি, বছরের পর বছর চলছে। চিট ফান্ড, নারদ, অনেক দেখেছি। চলছে তো চলছেই। একটা বাতাবরণ তৈরি করে দিয়ে তদন্ত চলতেই থাকল। আর বিরোধী দলগুলো সেটা নিয়ে তৃণমূলকে লক্ষ্য করে অপপ্রচার চালাবে, কুৎসা চালাবে, তা হতে পারে না।’’
এসএসসি দুর্নীতি মামলায় কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডির হাতে শনিবার গ্রেফতার হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গ্রেফতারের পর এখন এসএসকেএমের কার্ডিওলজি বিভাগে তিনি ভর্তি। গ্রেফতার করা হয়েছে ‘পার্থ-ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কেও। ইডি সূত্রের খবর, তাঁর বাড়ি থেকে নগদ প্রায় ২২ কোটি টাকা, ৭৬ লক্ষ টাকার গয়না এবং ১৮টি মোবাইল ফোন মিলেছে। মিলেছে অনেক বিদেশি মুদ্রাও।