টুইটের সঙ্গে বাড়ির ভাড়া দেওয়ার দুটি রশিদও জুড়ে দিয়েছেন কুণাল। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
মহার্ঘ ভাতা (ডিএ)-র দাবিতে ধর্না দিতে দিল্লি গিয়েছিল সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। সেখানে তাঁরা মোটা টাকায় ভাড়া নিয়েছিল হিন্দু মহাসভার বাড়ি। এমনটাই অভিযোগ করে টুইট করলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। টুইটের সঙ্গে বাড়ির ভাড়া দেওয়ার দুটি রশিদও জুড়ে দিয়েছেন তিনি। একটি রশিদে এক লক্ষ টাকা, দ্বিতীয় রশিদে ৭৩ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
নিজের টুইটের সঙ্গে বেশ কিছু প্রশ্নও তুলে ধরেছেন কুণাল। তাঁর প্রশ্ন, রশিদগুলি আসল না নকল? সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ দিল্লিতে কাদের আশ্রয়ে ছিলেন? এত টাকাই বা নগদে দেওয়া হল কেন? এমনই সব প্রশ্নের জবাব চেয়েছেন তৃণমূলের মুখপাত্র। কুণাল লিখেছেন, ‘‘এই রশিদগুলি আসল না নকল? যদি আসল হয়, তাহলে যৌথ মঞ্চ দিল্লিতে কাদের আশ্রয়ে ছিল, কোথায় ছিল বুঝে নিন। যদি এই টাকা দেওয়া হয়, তাহলে এত টাকা নগদে কেন? তাহলে টাকা কে বা কারা দিচ্ছে? কত টাকা উঠছে? মঞ্চের পর্দার পেছনের মুখগুলো স্পষ্ট হচ্ছে। রামবামকং। যদি রশিদ ভুল হয়, মঞ্চ জানাক।’’ এমন সব প্রশ্ন তুলে, কুণাল আসলে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ডিএ-র দাবিতে দিল্লিতে ধর্না দিতে যাওয়ার পিছনে বিজেপির থাকার ইঙ্গিত করেছেন বলেই মত বাংলার রাজনীতির কারবারিদের।
রাজধানীতে ধর্নায় বিতর্ক। ছবি: টুইটার।
তৃণমূল মুখপাত্রের এমন অভিযোগের জবাব দিয়েছেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের নেতা সন্দীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘আমরা মোট ৫৪০ জন দিল্লিতে ধর্না দিতে গিয়েছিলাম। সেখানে হিন্দু মহাসভার বাড়ি ছাড়াও, সামনের একটি বিয়েবাড়ি এবং বিড়লা মন্দিরে ছিলাম। মঞ্চের বেশি সংখ্যার সদস্যেরা ছিলেন হিন্দু মহসভার বাড়িতেই। তাই ভাড়া বাবদ অনেক টাকাই আমাদের সেখানে দিতে হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা কোনও কিছুই লুকিয়ে রাখিনি। টাকা সব নগদেই দিয়েছি, তার রশিদও পেয়েছিলাম। যে রশিদগুলি প্রকাশ করা হয়েছে, তাও আমরা আগেই প্রকাশ্যে এনেছিলাম। তাই আমাদের ধর্নার খরচ বা অন্য কোনও বিষয় নিয়ে কারও কিছু জানার থাকে, তা আমরা জানাতে প্রস্তুত। কারণ দিল্লি সফরের যাবতীয় খরচের হিসেবনিকেশ করে অডিটও হয়ে গিয়েছে।’’
দিল্লির যন্তর মন্তরে ধর্না দিয়ে আসার পরেও শহিদ মিনারে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সদস্যেরা। আর সেই নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাত চলছেই। অন্য দিকে, সোমবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ ডিএ নিয়ে সরকারি কর্মচারী সংগঠন এবং রাজ্য সরকারকে বৈঠতে বসতে নির্দেশ দিয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে বৈঠকে বসতে হবে। আদালত নির্দেশে বলেছে, রাজ্যের মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে কমিটি তৈরি হবে। কর্মচারী সংগঠনের তরফে পাঁচ জন সদস্য ওই বৈঠকে থাকবেন।