TMC

দূত-ক্ষোভের মধ্যে হুঁশিয়ারি ভোট করানোর

‘দিদির দূত’ হয়ে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক আগেও বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন। শুক্রবার তিনি যান উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার ধর্মপুর ২ পঞ্চায়েত এলাকায়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:৩৯
Share:

রাস্তা নিয়ে বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়কে নালিশ বিনোদপুরের বাসিন্দাদের। শুক্রবার। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত

‘দিদির দূতেরা’ এখনও নিয়মিত বিক্ষোভের মুখে পড়ছেন। বিশেষ করে তৃণমূলের কয়েক জন মন্ত্রী, সাংসদকে ঘিরে বার বার বিক্ষোভ হচ্ছে। এরই মধ্যে শাসক দলের অন্যতম এক রাজ্য মুখপাত্র আবার ‘প্রশাসন এবং তৃণমূল দাঁড়িয়ে থেকে ভোট করিয়ে দেবে’ মন্তব্য করে বিতর্ক বাড়িয়েছেন।

Advertisement

‘দিদির দূত’ হয়ে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক আগেও বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন। শুক্রবার তিনি যান উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার ধর্মপুর ২ পঞ্চায়েত এলাকায়। স্থানীয়দের নালিশ, এলাকার উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়মিত ওষুধ পাওয়া যায় না, আলোর সুব্যবস্থা নেই, চিকিৎসকেরও অভাব। জ্যোতিপ্রিয় তখনই ফোনে কথা বলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে। পরে মন্ত্রী বলেন, ‘‘ওষুধ সরবরাহ শীঘ্রই স্বাভাবিক হয়ে যাবে। সপ্তাহে দু’দিন অন্তত চিকিৎসক দেওয়া যায় কি না, দেখা হচ্ছে।’’ সরকারি নানা প্রকল্পে বঞ্চনার অভিযোগও করেন কেউ কেউ। মন্ত্রীর আশ্বাস, তিন দিনের শিবির হবে। সেখানে নথিপত্র নিয়ে গেলে সমস্যা মিটবে।

এ দিন ফের গ্রামবাসীর নালিশ শুনতে হয়েছে বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়কেও। সাংসদের কাছে রাস্তা সংস্কারের দাবি জানান খয়রাশোলের বড়রা পঞ্চায়েতের বিনোদপুর গ্রামের বাসিন্দারা। বালি বোঝাই গাড়ি চলায় মাত্র তিন বছর আগে কোটি টাকা খরচ করে তৈরি পিচ রাস্তা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। আবাস যোজনায় বাড়ি না পাওয়ার নালিশও শুনতে হয় শতাব্দীকে। পানীয় জল, পথবাতি, নিকাশি নালা, কমিউনিটি হল-সহ একাধিক দাবি তোলেন ওই পঞ্চায়েতেরই কৈথি গ্রামের বাসিন্দারাও। সাধ্যমতো দাবি পূরণের আশ্বাস দেন শতাব্দী।

Advertisement

এই কর্মসূচিতে এ দিনই বীরভূমের লাভপুরে গিয়েছিলেন তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য মুখপাত্র দেবু টুডু। পঞ্চায়েত ভোট প্রসঙ্গে বিরোধীদের কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘সিপিএম, বিজেপি প্রার্থী খুঁজে না পেলে আমরা কী করতে পারি? বিজেপি নেতাদের বৌয়েরাই তো দাঁড়াতে চাইছেন না। আমরা তো আর আমাদের বৌয়েদের ওদের হয়ে দাঁড় করাতে দিতে পারি না।’’ এর পরই তাঁর মন্তব্য, ‘‘প্রশাসন এবং তৃণমূল দাঁড়িয়ে থেকে ভোট করিয়ে দেবে, এটা বলতে পারি।’’ তৃণমূল নেতাদের এই মনোভাবের সমালোচনা করেছে বিজেপি। বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলছেন, ‘‘মানুষের মধ্যে ক্ষোভ আছে। মানুষের প্রশ্ন করার অধিকারও আছে।’’

সিউড়ির আলুন্দা অঞ্চলে দিদির দূত, বিধায়ক তথা বীরভূমের জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীকে ঘিরেও বিক্ষোভ হয়। গ্রামবাসীর একাংশের অভিযোগ, আবাস যোজনায় ‘কাটমানি’ নিয়েছেন আলুন্দা পঞ্চায়েতের প্রধান রুবিদা বিবি। এলাকার একটি খেলার মাঠও প্রধান বিক্রি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ তোলা হয়। গ্রামবাসীর দাবি, বিধায়কের কাছে সেই সব অভিযোগ জানাতে গেলে প্রধানের অনুগামীরা স্লোগান দিয়ে তাঁদের চুপ করিয়ে দেন। তবে এই প্রসঙ্গে প্রধানের দাবি, গ্রামবাসীর মধ্যে কোনও ক্ষোভ নেই। সিপিএম ও বিজেপির লোকেরা ইচ্ছাকৃত ভাবে এই বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। বিধায়কও বলেন, ‘‘এলাকায় কোনও বিক্ষোভ নেই।’’

কোচবিহারের সিতাইয়ের ব্রহ্মত্তরচাতরায় জাটিগাড়া মাধবচন্দ্র হাই স্কুলে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবার বিজেপি বিধায়ক বরেন বর্মণ। তিনি স্কুলে অনিয়মিত বলে অভিযোগ রয়েছে। স্কুলে শিক্ষকও কম। সব শুনে স্কুল থেকেই শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সত্যজিৎ বর্মণকে ফোন করেন জগদীশ। পরে জগদীশ বলেন, ‘‘বিধায়ক হওয়ায় প্রধান শিক্ষক নিয়মিত স্কুলে যান না। স্কুল নিয়ে তাঁর কোনও ভাবনাচিন্তাও নেই।’’ বরেনের বক্তব্য, ‘‘দশ জন শিক্ষকের কেউ অবসর নিয়েছেন, কেউ বদলি হয়েছেন। নতুন করে নিয়োগ হয়নি।’’

উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখরে ‘দিদির দূত’ কর্মসূচিতে গিয়ে ফের আবাস নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন কানাইয়ালাল আগরওয়াল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement