ফাইল চিত্র।
শিল্পশহরে শ্রমিক সম্মেলনের মহড়া দিয়েই হল তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমাবেশের প্রস্তুতি। হলদিয়া জুড়ে শুক্রবার ছিল সাজ সাজ রব।
আজ, শনিবার বন্দর শহরে রানিচকের সংহতি ময়দানে মহা সমাবেশ করবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক। তার আগে শুক্রবার দুর্গাচকে কুমারচন্দ্র জানা অডিটোরিয়ামে শ্রমিক সম্মেলন করে আইএনটিটিইউসি-র পূর্ব মেদিনীপুরের দুই সাংগঠনিক জেলা কমিটি। সেই সম্মেলন শেষে স্বস্তিতে জেলা থেকে রাজ্য কমিটির নেতারা। খুশির রেখা মন্ত্রীদের মুখেও। শুক্রবার হলদিয়ার এই শ্রমিক সম্মেলনে আইএনটিটিউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পূর্তমন্ত্রী মলয় ঘটক, শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্না, জেলার দুই মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র ও অখিল গিরি। প্রায় ১,২০০ শ্রমিকের উপস্থিতিতে ভরা ছিল সম্মেলনস্থল। তার মধ্যে থেকে লটারির মাধ্যমে বেছে নেওয়া ৫৪ জন শ্রমিক প্রতিনিধি নিজেদের বক্তব্য রাখেন।
সম্মেলনের এই পড়া ভিড় শুধু নেতৃত্বকেই নয়, আশ্বস্ত করেছে শ্রমিক প্রতিনিধিদেরও। মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেউ কেউ এই বলে আফশোস করেছেন যে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমাবেশ ঘিরে জেলা জুড়ে যে উন্মাদনা ও ঐক্যের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে, বিধানসভা নির্বাচনের মুখে এই সাংগঠনিক অবস্থা থাকলে হলদিয়া বিধানসভা হারাতে হত না। কারও আবার দাবি, এ বার অন্তত শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় সংগঠন উদ্যোগী হোক। বিভিন্ন কারখানার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তৈরি হোক ‘চার্টার অফ ডিমান্ড’।
আইএনটিটিইউসি-র বর্তমান জেলার সভাপতি শিবনাথ সরকার যে একসময় ‘দাদার (শুভেন্দু অধিকারী) অনুগামী’দের মিছিলে হেঁটেছেন, সে প্রশ্নও উঠেছে। সেই ছবিও রাজ্য নেতাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলেই খবর।
সম্মেলন শেষে ঋতব্রতের আশ্বাস, শ্রমিকদের বক্তব্যের নির্যাস অভিষেককে জানানো হবে। ঋতব্রত বলেন, ‘‘শুক্রবার শ্রমিকরা নিজেদের সমস্যার কথা বলেছেন। সেগুলি লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। শনিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শ্রমিকদের উদ্দেশে বার্তা দেবেন।’’
অভিষেকের সভা ঘিরে তোড়জোড়ের মধ্যেই রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল এবং কংগ্রেসকে একযোগে পরিবারতন্ত্রের প্রশ্নে বিঁধেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রে আগে এতদিন যে সরকার চলত তারা শুধুমাত্র পরিবারতন্ত্রের উপর নির্ভর করে। তৃণমূল কংগ্রেসও পরিবারতন্ত্র নির্ভরশীল রাজনৈতিক দল। যে সব দলে পরিবারতন্ত্র চলে সেখানকার নেতারা আর্থিকভাবে ফুলে-ফেঁপে ওঠেন। সাধারণ মানুষের কোনও উন্নতি হয় না।’’ একই সঙ্গে শুভেন্দুর দাবি, ‘‘বিজেপি পরিবারতন্ত্রে বিশ্বাসী নয়।’’ বিধায়ক তথা কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি তরুণ মাইতি পাল্টা বলেন, ‘‘তৃণমূলে থাকাকালীন নিজে তিনটে দফতরের মন্ত্রী, বাবা এবং এক ভাই সাংসদ, আরেক ভাই পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। এখন সেই চেষ্টা সফল হচ্ছে না বলেই হতাশায় এই ধরনের কথাবার্তা বলছেন।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।