মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
নবীন ও প্রবীণ প্রজন্মের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক নতুন করে মাথা তুলেছে তৃণমূলের অন্দরে। দল ও প্রশাসনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরসূরি কে হবেন, সেই নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা। সোমবার এই নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিলেন, আপাতত দলে তিনিই শেষ কথা।
প্রশ্নটি ছিল মায়াবতী প্রসঙ্গে। বিএসপি নেত্রী মায়াবতী ভাইপো আকাশ আনন্দকে দলে তাঁর উত্তরসূরি ঘোষণা করেছেন ইতিমধ্যেই। মমতা কি এরকম কোনও পরিকল্পনা করে চলছেন? তৃণমূল নেত্রীর জবাব, “তৃণমূল কংগ্রেসই তো একটি পরিবার। আমি সবাইকেই একটি পরিবার হিসেবেই ভাবি। ফলে যখন সময় হবে, তৃণমূল পরিবার যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবে। এখন যা চলছে তাই চলবে।”
কিছু দিন আগে দলের একটি সভায় বয়স নিয়ে ওঠা প্রশ্ন (যার সূচনা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য ঘিরে) খারিজ করে দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। কিন্তু তার পরেই নবীনদের পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ মন্তব্য করেন, ‘‘দেহত্যাগ না করলে পদত্যাগ নয়। এ কেমন কথা!’’ তখন থেকেই মুখ খুলে সেই বিতর্কে একে একে যুক্ত হন দলের আরও একাধিক নেতা। সেই প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, ‘‘অনেকেই যোগ্য লোকদের সামনে আসতে দেন না। সেটা ঠিক নয়।’’
এরপরই কুণাল ঘোষই মন্তব্য করেন, আগামী ২০৩৬ সাল পর্যন্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। তার পরে মুখ্যমন্ত্রী হবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিযেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে দলের বিশেষ অধিবেশনে অভিষেকের ছবি না থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে যিনি শোরগোল তুলেছিলেন, সেই কুণালের এমন ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ও বিরোধীদের তীব্র কটাক্ষের মুখে পড়েছে!
সরকার ও দল পরিচালনা, প্রবীণদের পদ আঁকড়ে থাকা— এ সব নিয়ে কুণাল সম্প্রতি যখন নানা প্রশ্ন তুলেছিলেন, তখন চর্চা শুরু হয়েছিল মেঘের আড়ালে কি ‘প্রভাবশালী’ কেউ আছেন? সেই মেঘনাদের ইঙ্গিতেই কি শাসক দলের মুখপাত্র প্রকাশ্যে এমন কথা বলছেন? কুণাল অবশ্য তখন ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন, পিছনে কেউ নেই। দলের ‘মঙ্গল কামনা’ করেই তিনি যা বলার, বলেছেন। রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, আজ দিল্লিতে বসে এই নিয়ে কোনওরকম প্রচারের মুখ বন্ধ করে দিতে চাইলেন মমতা নিজেই।