TMC

দিল্লির লড়াইয়ের জন্য চাই নতুন মুখ, লোকসভা এবং রাজ্যসভার জন্য প্রার্থীর খোঁজে তৃণমূল

লোকসভা ভোটের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিলের আর এগারো মাসও বাকি নেই। পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে এই মুহূর্তে ২২টি রয়েছে তৃণমূলের দখলে।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:১১
Share:

সংসদ। ফাইল চিত্র।

চৈত্র শেষের দহনে এমনিতেই দফারফা বঙ্গবাসীর। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের ব্যস্ততা এবং উদ্বেগ তার মধ্যে যেন আরও এক কাঠি বেশি। রসিকতা করে বলা হচ্ছে, অদৃশ্য এক ‘প্রার্থী চাই’ বিজ্ঞাপন এখন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের বুকে সাঁটা!

Advertisement

রাজ্যসভার সদস্য লুইজ়িনহো ফেলেরো পদত্যাগ করার পরে তৃণমূলের নতুন প্রার্থী খোঁজার বিষয়টি বেশি করে দেখা যাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু রাজনৈতিক শিবির বলছে— শুধু একটি রাজ্যসভার আসনই নয়। কয়েক মাসের মধ্যে অন্তত ২৫-২৬ জন নতুন প্রার্থী বাছাই করা প্রয়োজন, যাঁদের দিল্লির লড়াইয়ের জন্য (লোকসভা এবং রাজ্যসভা) প্রস্তুত করতে হবে। লোকসভা ভোটের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিলের আর এগারো মাসও বাকি নেই। পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে এই মুহূর্তে ২২টি রয়েছে তৃণমূলের দখলে। দলীয় সূত্রের হিসাবে এই ২২ জনকেই যে ফের টিকিট দেওয়া হবে, বিষয়টা এমন নয়। সূত্রের মতে, বিভিন্ন কারণে (প্রার্থীদের বয়স, গত পাঁচ বছরের কাজের বহর ইত্যাদি) বাদ পড়বেন জনা চারেক সাংসদ। যে হেতু ৪২-এর মধ্যে ৪২টি আসনেই লড়বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল, তাই শুধুমাত্র লোকসভার জন্যই প্রয়োজন হবে জনা ২৪ নতুন মুখ।

লোকসভার পাশাপাশি এ বার রাজ্যসভার দিকে তাকালে দেখা যাচ্ছে, অগস্ট মাসে তৃণমূলের ৫ জন সাংসদের (ডেরেক ও’ব্রায়েন, সুখেন্দুশেখর রায়, দোলা সেন, সুস্মিতা দেব এবং শান্তা ছেত্রী) মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তা ছাড়া ফেলেরোর পদত্যাগের ফলে (এই আসনের মেয়াদ বাকি তিন বছর) বাড়ল আরও এক। সূত্রের মতে, মোট এই ৬টি আসনের মধ্যে ২টিতে নতুন মুখ দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সব মিলিয়ে নতুন মুখের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে সেই ২৫ বা ২৬ জন।

Advertisement

সূত্রের মতে, চট করে এই একগুচ্ছ প্রার্থী পাওয়া কিছুটা দুষ্কর তৃণমূলের পক্ষে। তার কারণ এই নয় যে দলে যোগ্য নেতার অভাব রয়েছে। কিন্তু এই পর্যায়ে লড়ার মতো যাঁরা যোগ্য নেতা বা কর্মী, তাঁরা কেউই ফাঁকা বসে নেই। তাঁরা হয় জেলা পরিষদ, নয় পুরসভা অথবা রাজ্যের মন্ত্রিসভায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন। সেখান থেকে তাঁদের সরিয়ে নিলে ওই পদগুলিতে আবার শূন্যতা তৈরি হবে। তৃণমূলের এক ব্যক্তি-এক পদ অনুযায়ী, তাঁদের কাউকে নিজ পদে রেখে একই সঙ্গে লোকসভায় দাঁড় করানোটাও সম্ভব নয়।

দলীয় সূত্রের খবর, এই সব দিক বিবেচনা করে যে কয়েকটি নাম নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে দল, তার মধ্যে রয়েছেন অর্পিতা ঘোষ, বিশ্বজিৎ দেব, দেবাংশু ভট্টাচার্য, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, রত্না দে নাগ, কুণাল ঘোষ, পূর্ণেন্দু বসু, ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, অলোক দাস, মইনুল হাসান, সায়নী ঘোষেরা। অধিকারী পরিবারের গড় তমলুক এবং কাঁথি অথবা পূর্ব মেদিনীপুরে দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য ঝাঁঝালো প্রার্থীর খোঁজ করা হচ্ছে বলে দলীয় সূত্রের খবর, যিনি শুভেন্দু অধিকারীর আগ্রাসী মেজাজের সঙ্গে প্রচারে ও জনসভার বক্তৃতায় পাল্লা দিতে পারবেন।

অন্য দিকে রাজ্যসভায় অন্তত দু’টি আসনে নতুন প্রার্থী প্রয়োজন তৃণমূলের। অভিরূপ সরকার, নিপুন বরা, সাকেত গোখলে, মজিদ মেমনের মতো নাম বিবেচনার মধ্যে রয়েছে। তা ছাড়া কংগ্রেসের কিছু বিক্ষুব্ধ সাংসদের দিকেও নজর রেখেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও অন্য প্রদেশ থেকে সাংসদ আনার প্রশ্নে দলের নেতা কর্মীদের কাছে ভুল বার্তা যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কোনও প্রাক্তন আমলা বা অধ্যাপককে সাংসদ হিসাবে বিবেচনা করলে, তাঁকে বা তাঁদের একটু আগে থেকেই দলের মূলধারার সঙ্গে জুড়তে হবে, কিন্তু হাতে যে অঢেল সময়, এমনটাও নয়।

সব মিলিয়ে তাই প্রার্থীর খোঁজ শুরু হতে চলল বলে, এমনটাই মনে করছে দলীয় সূত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement