গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান এবং তাঁর বাহিনীর বিরুদ্ধে জমি দুর্নীতির অভিযোগ জানতে এ বার পদক্ষেপ করল রাজ্য সরকার। সে জন্য উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির দুটি ব্লকে মোট সাতটি শিবির করেছে রাজ্য ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর। সেখানে জমি এবং পাট্টা সংক্রান্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এমনকি, বেলা গড়াতে দেখা গেল মানুষের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন সরকারি আধিকারিক এবং কর্মীরা।
রবিবার সন্দেশখালি-১ এবং সন্দেশখালি-২ ব্লকে দেখা গেল ‘দুয়ারে সরকার’-এর মতো করে শিবির করে জমি লিজ় এবং পাট্টা সংক্রান্ত অভিযোগ শুনতে হাজির হয়েছে রাজ্য ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর। সকাল থেকেই সেই শিবিরগুলোতে লোকজনের ভিড়ও মন্দ হচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দিয়ে হোর্ডিং-এ লেখা রয়েছে, ‘পরিবর্ধিত সমস্যা সমাধান জনসংযোগ।’ সন্দেশখালিতে তিনটি নদী পেরিয়ে শয়ে শয়ে লোক আসছেন ওই শিবিরগুলিতে।
সন্দেশখালিতে অভিযোগ জানতে সরকারি শিবির। —নিজস্ব চিত্র।
শেখ শাহজাহান, উত্তম সর্দার, শিবপ্রসাদ হাজরাদের নামে শয়ে শয়ে অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসীরা। তার মধ্যে অন্যতম হল জমি কেড়ে নিয়ে ভেড়ি করা এবং পাট্টা না দেওয়া। ওই সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই শিবির শুরু হয়েছে। বস্তুত, গত মঙ্গলবার সন্দেশখালি ঘুরে ন্যাজাট কালীনগরে বৈঠকে গিয়ে গ্রামবাসীদের একটি অভিযোগ নিয়ে ‘বিশেষ ঘোষণা’ করেছিলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। তিনি জানান, গ্রামবাসীদের অনেকের মাছের ভেড়ি লিজ়ে নিয়ে টাকা না দেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, তা সমাধান করবে তৃণমূল। তিনি বলেন, ‘‘অভাব-অভিযোগ রয়েছে। লিজ়ের টাকা দেয়নি। ঠকিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। চাষের ভেড়ির টাকা দেয়নি। গত দু’বছর ধরে এমন সব অভিযোগ উঠেছে। সেই টাকা দেওয়ানোর দায়িত্ব নেবে তৃণমূল।’’ রবিবারই রাজ্যের তিন মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক, সুজিত বসু এবং বিরবাহা হাঁসদার সন্দেশখালি যাওয়ার কথা। তার আগে এই শিবিরগুলোতে অভিযোগ জমা নেওয়া হচ্ছে।
অন্য দিকে, ‘বেপাত্তা’ শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা শিবু গ্রেফতার হয়েছেন শনিবার। রবিবার তাঁকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে নিয়ে আসা হয়। সন্দেশখালিকাণ্ডে গণধর্ষণ ও খুনের চেষ্টার ধারা যোগ করেছে পুলিশ। তাতে অভিযুক্ত হিসাবে নাম রয়েছে বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা উত্তম সর্দার এবং তৃণমূল নেতা শিবুর। পাশাপাশি, খুনের চেষ্টার ধারাতেও মামলা রুজু হয়েছে।