গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
বিধানসভা চত্বরে দাঁড়িয়ে জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা করেছেন বিজেপি বিধায়কেরা। এই মর্মে ১২ জন বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন বিধানসভার পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, উপমুখ্যসচেতক তাপস রায়।
এ ব্যাপারে আগেই বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসনিক স্তরে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। এর পরেই বৃহস্পতিবার বিধায়কদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয় থানায়। যদিও অভিযোগ প্রসঙ্গে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ওই অভিযোগে একাধিক ভুল রয়েছে, তবে “অভিযোগের জবাব আদালতেই দেওয়া হবে।”
কী কী ভুল রয়েছে অভিযোগে? শুভেন্দুর দাবি, ‘‘যে ১২ জন বিধায়কের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে তাঁদের মধ্যে বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিধায়ক শোভন কাঞ্জিলালেরও নাম রয়েছে। শুধু তা-ই নয় অভিযোগ পত্রে বিজেপির শালতোড়ার বিধায়ক চন্দনা বাউড়ির নাম চন্দ্রানী লেখা হয়েছে। এখানেই শেষ নয়, বিজেপির দাবি এফআইআরে বিজেপির হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের নাম লেখা রয়েছে। অথচ তিনি বুধবার বিধানসভায় আসেনইনি।
প্রসঙ্গত, বুধবার বিধানসভা চত্বরে শাসকদলের ধর্না চলাকালীন বিজেপি জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা করেছে বলে অভিযোগ এনেছে তৃণমূল। অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ধর্নায় উপস্থিত বিধায়কদের জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে কর্মসূচি শেষ করতে বলেন, তখনই শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপির বিধায়কেরা ‘চোর চোর’ বলে স্লোগান দিয়ে ওঠেন। শুধু তা-ই নয় বিজেপির বিধায়কেরা ওই সময় রীতি মেনে উঠেও দাঁড়াননি। তৃণমূলের অভিযোগ, ঘটনাটি যখন ঘটে তখন বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দুই ছিলেন বিধায়কদের নেতৃত্বে। যদিও বিজেপি বিধায়কেরা পাল্টা জানিয়েছিল, তাঁরা জাতীয় সঙ্গীত শুনতেই পাননি।
বৃহস্পতিবার এই প্রসঙ্গেই বিধানসভার স্পিকার বলেছিলেন, ‘‘ওঁরা জাতীয় সঙ্গীত শুনতে পেয়েছেন কি পাননি তা আমার জানার কথা নয়। ওঁরা যা করেছেন, এ ব্যাপারে প্রশাসনিক স্তরে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ এরপরেই বিজেপির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়।
প্রসঙ্গত, জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার মন্তব্য করেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমও। নারদ মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে এসে ফিরহাদ বলেন, ‘‘জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। আশা করব, এ ব্যাপারে আইন আইনের পথে চলে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ করবে।”