মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।
‘দ্রোহকাল’ মুক্ত হতে উপনির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যে ৬টি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনেই এই কোণঠাসা অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজছে শাসক দল। তৃণমূল কংগ্রেসের বড় অংশের দাবি, ভোটে জয় পেলে জনমতকে সামনে রেখেই বিরোধী প্রচার খণ্ডন করা যাবে।
আগামী ১৩ নভেম্বর রাজ্যের ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। এই ৬টি আসনের মধ্যে নৈহাটি, হাড়োয়া, মেদিনীপুর, তালড্যাংরা, সিতাই ছিল তৃণমূলের দখলে। একমাত্র মাদারিহাট ছিল বিজেপির। উপনির্বাচনে ৬টিতে জয় পাওয়া গেলেই আর জি কর-কাণ্ড ঘিরে উদ্ভূত চাপ থেকে মুক্ত হওয়া যাবে বলে মনে করছে তৃণমূল। সেই লক্ষ্যে এই উপনির্বাচনেই জনমত যাচাইয়ের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন দলীয় নেতৃত্ব। দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই মনে করছে, উপনির্বাচনে তৃণমূল আগের পাঁচটির পাশাপাশি বিজেপির হাতে থাকা মাদারিহাটে জয় পেলে সরকার-বিরোধী এই পরিবেশ অনেকটাই হাল্কা হয়ে যাবে। তাঁদের মতে, তাতেই প্রমাণ হয়ে যাবে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে শহুরে একাংশের এই আন্দোলন বৃহত্তর রাজ্যবাসী প্রত্যাখ্যান করেছে।
লোকসভা ভোটে এ বার উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের ফল ভাল। হাতে থাকা সিতাই আসনে আশাবাদী হলেও মাদারিহাটের লড়াই খুব সহজ নয় বলে মনে করছে তারা। নৈহাটি, হাড়োয়া বিধানসভা কেন্দ্রে সাংগঠনিক শক্তিই জয় এনে দেবে বলে শাসক শিবিরের মত। মেদিনীপুর ও তালড্যাংরায় লড়াই আছে বলে মনে করছেন দলের একাংশ। তবে সাধারণ ভাবে উপনির্বাচনে সরকার পক্ষ যে সুবিধাজনক অবস্থায় থাকে, তাতে বাধা কাটিয়ে সব ক’টি আসনেই জয় পাওয়া সম্ভব বলে মনে করছে তৃণমূল। এই অবস্থায় সেই জয় নিশ্চিত করেই সামগ্রিক ভাবে রাজ্য জুড়ে বার্তা দিতে চাইছে তারা।
বিরোধীরা অবশ্য উপনির্বাচনে স্বচ্ছ ভোট নিয়ে গোড়া থেকেই সংশয় প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, সাধারণ ভাবে রাজ্যে যে কোনও নির্বাচনেই ‘গা-জোয়ারি’র রাস্তা নেয় তৃণমূল। এ বারের উপনির্বাচনেও তার ব্যতিক্রমের কথা ভাবা যাচ্ছে না। তবে আর জি কর হাসপাতালের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যব্যাপী যে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে, তাতে ভোট বাধাহীন হলে তৃণমূল বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বলে বিরোধীদের একাংশের দাবি। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ অবশ্য বলছেন, ‘‘একটা ঘৃণ্য ঘটনাকে সামনে রেখে দু’মাসের বেশি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কুৎসা চালানো হচ্ছে। উপনির্বাচনে তার জবাব বিরোধীরা পাবে!’’ সেই সঙ্গেই তাঁর খোঁচা, ‘‘সেই ফল আঁচ করে এখন থেকেই স্বচ্ছতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হচ্ছে।’’