সদস্যপদ গেল তৃণমূলের দলবদলু প্রধান ও উপপ্রধানের

পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর গ্রামীণের খেলাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই দু’জনের সদস্যপদই খারিজ হয়ে গিয়েছে। পঞ্চায়েতের দলবিরোধী আইনেই প্রধান সবিতা ভক্তা, উপপ্রধান বিধান ঘোষের সদস্যপদ খারিজ হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৯ ০২:৩৩
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

ছিলেন তৃণমূলে। প্রধান, উপপ্রধানও হয়েছিলেন। লোকসভা ভোটের পরে ‘বিজেপি-হাওয়া’য় গা ভাসিয়ে যোগ দেন গেরুয়া-শিবিরে। শেষে তার জেরে পদ হারালেন দু’জন।

Advertisement

পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর গ্রামীণের খেলাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই দু’জনের সদস্যপদই খারিজ হয়ে গিয়েছে। পঞ্চায়েতের দলবিরোধী আইনেই প্রধান সবিতা ভক্তা, উপপ্রধান বিধান ঘোষের সদস্যপদ খারিজ হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, ‘দলবদলু’ প্রধান, উপপ্রধানের সদস্যপদ খারিজ হবে কি না, তা নিয়ে গত ৩১ জুলাই ব্লকে শুনানি হয়েছিল। সেখানে প্রধান, উপপ্রধান প্রথমে দাবি করেছিলেন, তাঁরা দলবদল করেননি। তাঁদের ভিডিয়ো দেখানো হয়। যাতে দেখা গিয়েছে, দু’জনই বিজেপির পতাকা ধরে দলবদল করছেন। মানতে বাধ্য হন ওই দু’জন। এর পরই দলবিরোধী আইনে ওই দু’জনের সদস্যপদ খারিজ হয়। ১ অগস্ট ব্লক থেকে জেলাকে জানানো হয়। ২ অগস্ট নতুন প্রধান-উপপ্রধানের নাম চূড়ান্ত করে ব্লকে পাঠানো হয়। পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী, জেলাশাসকের নির্দেশে নতুন প্রধান হন তৃণমূলের অঞ্জু বিবি, নতুন উপপ্রধান তৃণমূলের অমরেন্দ্র চক্রবর্তী। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল মানছেন, ‘‘পঞ্চায়েতের দলবিরোধী আইনে ওই দু’জনের সদস্যপদ খারিজ হয়েছে।’’ পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত আইন মেনে জেলাশাসক যা উপযুক্ত মনে করেছেন তাই করেছেন।’’

কী বলছে পঞ্চায়েত আইন?

Advertisement

১৯৭৩ সালের পঞ্চায়েত আইনের ২১৩ (এ) ধারায় সংশোধন আনা হয় ২০১০ সালে। সেখানে বলা হয়, নির্বাচিত সদস্য দলবদল করলেই সদস্যপদ খারিজ হবে। এটা একজনের ক্ষেত্রে যেমন, তেমনই এক-তৃতীয়াংশের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তৃণমূল আসার পর ২০১৪ সালে ওই ধারা ফের সংশোধন করা হয়। বলা হয়, ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের একসঙ্গে এক-তৃতীয়াংশ নির্বাচিত সদস্য দলত্যাগ করলে তাঁদের সদস্যপদ খারিজ হবে না। তবে কেউ এককভাবে দল ছাড়লে তাঁকে পদ ছাড়তে হবে।

খেলাড় পঞ্চায়েতে সদস্য ১৩। ২০১৮ সালের ভোটে ১১টি আসন পায় তৃণমূল, ২টি বিজেপি। প্রধান হন তৃণমূলের সবিতা, উপপ্রধান তৃণমূলের বিধান। লোকসভা ভোটের পরে প্রধান, উপপ্রধান বিজেপিতে যান। পঞ্চায়েতে তৃণমূলের দলনেতা ছিলেন অমরেন্দ্র চক্রবর্তী। তিনিই ব্লকে ওই দু’জনের সদস্যপদ খারিজের দাবি জানান। নিয়মমাফিক খেলাড় পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান-সহ ৪ জন (এক-তৃতীয়াংশ) যদি দলবদল করতেন, তাহলে তাঁরা দলবিরোধী আইনের আওতায় পড়তেন না। এ ক্ষেত্রে দলবদল করেন শুধু প্রধান ও উপপ্রধান। প্রশাসন সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত আইনের ৯ (৬) ধারা মেনেই নতুন প্রধান, উপপ্রধান ঠিক করেন জেলাশাসক। নতুন উপপ্রধান অমরেন্দ্র বলেন, ‘‘নির্দেশ পেয়েছিলাম। সোমবার শপথ নিয়ে উপপ্রধানের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছি।’’

সদ্য প্রাক্তন প্রধান সবিতা বলেন, ‘‘শুনেছি, সদস্যপদ খারিজ হয়েছে। চিঠি পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করব।’’ স্থানীয় তৃণমূলের এক নেতার কটাক্ষ, ‘‘ওঁদের আমও গেল, ছালাও গেল!’’ বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশ বলেন, ‘‘রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ করব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement