সমবায় দখলের পর তৃণমূল ও কংগ্রেস সমর্থিত প্রার্থীরা। নিজস্ব ছবি।
বাম-বিজেপি জোটের ‘নন্দকুমার মডেল’ ঠেকাতে এ বার জোট গড়ল তৃণমূল ও কংগ্রেস। মহিষাদল ব্লকের গেঁওখালি কৃষি সমবায় সমিতি দখল করল শাসকদল এবং হাত শিবিরের জোট। যদিও এই নির্বাচনে জোট গড়ে লড়েনি সিপিএম এবং বিজেপি।
বুধবার গেঁওখালি কৃষি সমবায়ের নির্বাচন ছিল। দুপুর ২টো পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। তার পর বিকেলে শুরু হয় ভোট গণনা। গণনা শেষে দেখা যায়, যে ৪৯ আসনে ভোটাভুটি হয়েছিল, তার মধ্যে ২৬টিতেই জিতেছেন তৃণমূল সমর্থিতেরা। সিপিএম এবং বিজেপি দুই দলের সমর্থিত প্রার্থীরা ৯টি করে আসনে জেতেন। কংগ্রেস সমর্থিতেরা জিতেছেন ৫টি আসনে।
ঘটনাচক্রে, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলায় ক’দিন আগেই নন্দকুমারের বহরমপুর কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেডের ভোটে বিজেপি ও বাম সমর্থিত প্রার্থীদের মধ্যে আসন সমঝোতা হয়েছিল বলে দাবি। ওই সমবায়ে সব আসনেই জেতে সেই বিরোধী মঞ্চ। তখন সিপিএমের তরফে বাম প্রগতিশীল প্রার্থীরা জিতেছেন দাবি করা হলেও পঞ্চায়েত ভোটের আগে চর্চায় উঠে আসে নিচুতলায় বাম-বিজেপি বোঝাপড়া। তার পর এই মহিষাদলের ইটমগরা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কেশবপুর জালপাই রাধাকৃষ্ণ কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতির পরিচালন সমিতির নির্বাচনেও বাম-বিজেপি জোট দেখা যায়। যদিও ভোটে বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি ওই জোট। ফল যায় শাসকদলের অনুকূলে।
মহিষাদলে কেশবপুরের সমবায় ভোটে রাম-বামের সেই সমঝোতা অবশ্য মুখ থুবড়ে পড়ার পরেই জেলায় ‘লাল সতর্কতা’ জারি হয়। সিপিএম নেতৃত্ব স্পষ্ট জানিয়ে দেন, সবুজ হটাতে গেরুয়ার সঙ্গে কোনও সমঝোতা নয়। নির্দেশের অন্যথা হলে বহিষ্কারের মতো কড়া শাস্তি জুটতে পারে। সেই মতো পাঁশকুড়ার মঙ্গলধারী ইউনাইটেড সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে আর বাম-বিজেপি জোট দেখা যায়নি। উল্টে জেলায় এ বার তৃণমূল ও কংগ্রেসের মধ্যে জোট নতুন করে নজর কাড়ল।
এ বিষয়ে কংগ্রেস নেতা রঘুনাথ কামিলা বলেন, ‘‘সমবায়ের উন্নয়নের জন্য আমরা জোট করে লড়াই করেছি। সাফল্যও এল তাতে।’’ জেলার তৃণমূল নেতা সুমার পাত্রও বলেন, ‘‘বিজেপিকে ঠেকাতে আমরা জোট করেছি। সেই উদ্দেশ্য পূরণ হয়েছে।’’ তবে এই জোটকে বিঁধতে শুরু করেছে বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অধীর চৌধুরী তো বিজেপি-তৃণমূলের আঁতাঁতের কথা বলেন। এখানে ওরাই জোট করেছে! এতেই সব স্পষ্ট হয়ে গেল।’’