সৌজন্য: মনোনয়ন জমা দিতে এসে তৃণমূল ও বিজেপি প্রার্থীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় রব্বানি-রাহুলেরও। রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায়। ছবি: চিরঞ্জীব দাস
নির্ধারিত সংখ্যার বেশি লোক নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়ার অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। অন্য দিকে, বিজেপির মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় রিটার্নিং অফিসারের ঘরে ঢুকে পড়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে। ওই অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগের জেরে তুলকালাম কাণ্ড বাধে উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসকের দফতরে। বিজেপি নেতারা পুলিশের সঙ্গে ও পরে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। বুধবার দুপুরে রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় জেলাশাসকের দফতরের ঘটনা।
যদিও রিটার্নিং অফিসারের ঘরে তৃণমূল ও বিজেপি নেতারা সৌজন্য বিনিময় করেছেন বলে খবর। তবে বিজেপির অভিযোগ, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া পরিচালনার কাজে প্রশাসন পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছে। জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক অরবিন্দকুমার মিনার অবশ্য বক্তব্য, পুলিশ ও প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের আইন মেনেই মনোনয়নপত্র জমা নিয়েছে। এ দিন কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষদিন ছিল। দুপুর ১টা নাগাদ বিজেপি প্রার্থী তথা জেলা পরিষদের সদস্য কমল সরকার কর্ণজোড়ার কালীবাড়ি এলাকা থেকে দলের শতাধিক নেতা-কর্মীকে নিয়ে রোড-শো করে জেলাশাসকের দফতরে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান।
নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, প্রার্থী-সহ চারজন মনোনয়নপত্র জমা দিতে রিটার্নিং অফিসারের ঘরে ঢুকতে পারেন। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষের অভিযোগ, এ দিন বিজেপির একদল নেতা কমলকে নিয়ে জেলাশাসকের দফতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। সেইসময় পুলিশকর্মীরা তাঁদের বাধা দিতে যান। বিজেপির বক্তব্য তারা কোনও আইন ভাঙেনি। বরং তাদের জেলা সহকারী সভাপতি গোপাল মজুমদারকে ঢুকতে বাধা দেয় পুলিশই। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপির নেতাদের সঙ্গে পুলিশের বচসা বেধে যায়। পরে অবশ্য পুলিশকর্মীরা গোপালকে দফতরে ঢুকতে দেন। দুপুর ২টো নাগাদ রিটার্নিং অফিসারের ঘরে কমল মনোনয়নপত্র জমা দেন। সঙ্গে ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ, রাজ্য সাধারণ সম্পাদক রথীন বসু, জেলা সভাপতি নির্মল দাম, জেলা পর্যবেক্ষক অমিত সাহা। অভিযোগ, সেই সময় কালিয়াগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি তৃণমূল প্রার্থী তপনদেব সিংহ, দলের রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষ, জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল, মন্ত্রী গোলাম রব্বানি, জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি গৌতম পাল ছাড়াও ১৫ জন নেতা বেআইনি ভাবে ওই ঘরে ঢুকে পড়েন। কানাইয়া, রব্বানি-সহ তৃণমূল নেতারা রাহুল, নির্মল ও কমলকে দেখে হাতজোড় করে সৌজন্য দেখান। রাহুল, নির্মল ও কমলও তৃণমূলের পাল্টা সৌজন্য বিনিময় করেন। এরই মধ্যে তৃণমূল কীভাবে নির্ধারিত সংখ্যার বেশি লোক নিয়ে রিটার্নিং অফিসারের ঘরে ঢুকল, সেই প্রশ্ন তোলেন কমল। এ নিয়ে অসীমের সঙ্গে তাঁর বচসা বাধে। এরপর রিটার্নিং অফিসারের অনুরোধে তৃণমূল নেতারা বেরিয়ে যান।
রাহুলের কথায়, ‘‘পুলিশ ও প্রশাসন তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে। সেই কারণে, তৃণমূল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য নির্ধারিত সংখ্যার বেশি লোক নিয়ে রিটার্নিং অফিসারের ঘরে ঢুকতে পেরেছে।’’ অসীম ও রব্বানির পাল্টা দাবি, তৃণমূল আইন মেনেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে। বিজেপিই বেআইনি ভাবে বেশি লোক নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে।