ছবি: সংগৃহীত।
চিট ফান্ড আইন সংশোধন বিলটি নিয়ে আজ লোকসভার আলোচনা পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল এবং বিজেপি সাংসদদের কাজিয়ায় পরিণত হল। বাগ্যুদ্ধ এমন পর্যায়ে গেল, যাতে স্পিকার ওম বিড়লা রীতিমতো ধমক দিয়ে লকেট চট্টোপাধ্যায়কে বললেন, ‘‘লোকসভা অধিবেশনকে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা বানাবেন না।’’
চিট ফান্ড আইন সংশোধন বিলটি গত অধিবেশনে এলেও সময়ের অভাবে পাশ করানো যায়নি। তাই এই অধিবেশনের প্রথম দিনটাই এই বিলের জন্য ধার্য ছিল। গোড়ার দিকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলতে ওঠেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রকে অনুরোধ করছি, দয়া করে এ বার সারদা তদন্ত গোটান। আমরা যদি অন্যায় করে থাকি, শাস্তি দেওয়া হোক। কিন্তু এটাকে ঝুলিয়ে রেখে নির্বাচনের বিষয় বানাবেন না।’’ পশ্চিমবঙ্গে ভুয়ো লগ্নি সংস্থা সংক্রান্ত কেলেঙ্কারি সামনে আসার পরে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির (আরবিআই, সেবি) ভূমিকা নিয়েও তদন্ত করা হোক। সেই প্রসঙ্গও তুলে কল্যাণ প্রশ্ন করেন, ‘‘আরবিআই বা সেবি-র এক জন কর্তাকেও কি ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে?’’
কল্যাণ যখন বলছিলেন, তখন টুঁ শব্দ করেননি বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের দুই সাংসদ লকেট এবং দিলীপ ঘোষ। কিন্তু তাঁর পালা আসতেই নাটকীয় ভাবে গলা সপ্তমে তুলে বলা শুরু করেন লকেট। বলেন, ‘‘আমরা চাই চিটফান্ডের মাথাদের ধরা হোক। না হলে কিছু হবে না। ওই চিটফান্ডে কোটি কোটি মানুষের চোখের জল লুকিয়ে আছে যাদের জন্য, তাদের এই বিল নিয়ে কথা বলা শোভা পায় না। পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের পকেটে চিট ফান্ডের টাকা গিয়েছে।’’ ঘটনাচক্রে তখন স্পিকারের আসনে তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। তিনি জোর গলায় লকেটকে বলতে থাকেন, ‘‘বিচারাধীন বিষয় সংসদে আনবেন না।’’ পাল্টা চিৎকার শুরু হয় তৃণমূল বেঞ্চ থেকেও।
আরও পড়ুন: রাজ্যপাল থেকে ‘রাজনীতিপাল’ হয়ে উঠবেন না, ধনখড়ের ভূমিকা নিয়ে রাজ্যসভায় সরব তৃণমূল
এরই মধ্যে আসনে ফেরেন ওম বিড়লা। লকেটকে বলেন, ‘‘লোকসভা অধিবেশনকে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা বানাবেন না। বিলের বাইরের বিষয় নিয়ে কথা বলবেন না।’’ তবু শান্ত হননি লকেট। বলে চলেন, ‘‘যেখানে চুরি হয়, মোদীজি সেখানে যান। আমরাও যাই চৌকিদার হিসেবে।’’
তুলনায় ঝাঁঝ কিছু কম দেখিয়ে দিলীপের আক্রমণ, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে চিট ফান্ডের নামে টাকা একত্রিত করে ভোটকে প্রভাবিত করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের মন্ত্রী ও তৃণমূলের সাংসদ, বিধায়ক সবাই এতে জড়িত।’’ তাঁকেও স্পিকার সতর্ক করে বলেন শুধু বিল নিয়ে কথা বলতে। পরে তৃণমূলের পক্ষ থেকে কাকলি স্পিকারকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেন, বিজেপি সাংসদদের বক্তৃতার অংশবিশেষ রেকর্ড থেকে বাদ দেওয়া হোক ।