বিধানসভায় জমা দেওয়া কাঞ্চনের মেডিক্যাল বিলের অঙ্ক নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। —ফাইল ছবি।
ফের শিরোনামে অভিনেতা বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক। এ বার বিধানসভায় জমা দেওয়া তাঁর মেডিক্যাল বিলের পরিমাণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মঙ্গলবার কাঞ্চন বিধানসভায় এসে ছ’লক্ষ টাকার মেডিক্যাল বিল জমা দেন। বিধানসভার সচিবালয় সূত্রে খবর, বিলে অর্থের পরিমাণ দেখেই চক্ষু চড়কগাছ আধিকারিকদের।
এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে শ্রীময়ী চট্টরাজকে বিয়ে করেন কাঞ্চন। আর নভেম্বর মাসে কন্যাসন্তানের পিতা হন তিনি। দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ৩ নভেম্বর কন্যাসন্তানের বাবা হন কাঞ্চন। স্ত্রী শ্রীময়ীর জন্য সেই বেসরকারি হাসাপাতালটি বিল করে ছ’লক্ষ টাকা। সেই বিলও মিটিয়ে স্ত্রী-কন্যাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন তিনি। বিধানসভা সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সমস্ত তথ্য ও নথিসমেত বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভাগে বিলটি জমা দিয়েছেন উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক।
অভিনেতা-বিধায়কের বিল বিধানসভায় জমা দেওয়ার কথা জানাজানি হতেই শুরু হয় গুঞ্জন। অতীতেও পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় স্বাস্থ্য বিষয়ক বিল নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন মন্ত্রী বিধায়কেরা। বামফ্রন্ট জমানায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর মন্ত্রিসভার এক সদস্য মানব মুখোপাধ্যায় চশমার জন্য ৩০ হাজার টাকা দাবি জানিয়েছিলেন বিধানসভার কাছে। তা নিয়ে এতটাই বিতর্ক হয় যে, তিনি বরাদ্দ অর্থ নেননি। ২০১১ সালে পরিবর্তনের সরকার ক্ষমতায় আসার পরেও বিতর্ক হয়েছে। তৎকালীন নারী-শিশু ও সমাজকল্যাণ উন্নয়ন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র আবার চশমার জন্য এক লক্ষ টাকার বিল জমা দেন। তা নিয়েও তীব্র বিতর্ক হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে তিনি তা আবার সরকারকে ফিরিয়ে দেন। দাবি করেন, ভুলবশত এমন বিল হয়ে গিয়েছিল।
তবে দু’টি ক্ষেত্রেই প্রশ্ন উঠেছিল মন্ত্রীদের মেডিক্যাল বিল নিয়ে। আর বিধায়কদের বিল নিয়ে প্রশ্ন উঠছে সম্ভবত এই প্রথম। তাঁর এমন বিল জমা দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে কাঞ্চন বলেন, ‘‘আপনারা যেখান থেকে বিলের ব্যাপারে জেনেছেন, সেখান থেকেই বাকি বিষয়টি জেনে নিন।’’ কাঞ্চন ছ’লক্ষ টাকার বিল জমা দেওয়ার পরেই তা জানানো হয় বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এ প্রসঙ্গে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে স্পিকার বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিল ছাড়পত্র দেওয়ার আগে আমি নিজে সব দেখি। এ ক্ষেত্রেও আমি নিজেই সব কাগজপত্র খুঁটিয়ে দেখব। তার পর যদি কোনও প্রশ্ন দেখা দেয় তা হলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ডেকে পাঠিয়ে কথা বলব।’’ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিধায়কেরা বেতনের পাশাপাশি একাধিক ভাতা-সহ মাসে এক লক্ষ ২১ হাজার টাকা পান। পাশাপাশি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধাও দেওয়া হয় বিধায়কদের। অর্থাৎ কোনও বিধায়ক হাসপাতালের বিল জমা দিলে তার খরচ বহন করে বিধানসভা।