‘হেরিটেজ’: ইমাম বরকতির লালবাতি লাগানো সেই গাড়ি।
ভিআইপিদের গাড়িতে লাল বা নীলবাতি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কেন্দ্র। ১ মে তা কার্যকর হওয়ার পরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিরা গাড়ির লালবাতি খুলে ফেলেছেন। মন্ত্রী-আমলারাও গাড়ির মাথা থেকে লাল-নীলবাতি নামিয়ে ফেলছেন। ব্যতিক্রম কলকাতার টিপু সুলতান মসজিদের ইমাম নুর-উর রহমান বরকতি। লালবাতি যে তিনি ছাড়বেন না, সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
কী ভাবে গাড়িতে লালবাতি লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বরকতি সাহেব? বুধবার ইমাম বরকতির যুক্তি, ‘‘কেন্দ্রের আইন এখানে চলে না। রাজ্য সরকারের আইন চলে।’’ বরকতি বলেন, ‘‘আমি যে গাড়িতে লালবাতি লাগাই মুখ্যমন্ত্রী জানেন। এ নিয়ে তিনি কোনও আপত্তি করেননি।’’
তবে আদালতের নির্দেশে পরিবহণ দফতর লালবাতি প্রাপকদের যে তালিকা তৈরি করেছে, তাতে বরকতির নাম নেই। তা হলে? এ বার ইমাম সাহেবের যুক্তি— ‘‘বংশানুক্রমে আমরা গাড়িতে লালবাতি লাগাই। এটা আমাদের অধিকার!’’
কী ব্যাপার সেটা? বরকতি সাহেব বলেন, ‘‘আমার বাবা ৫০ বছর এই মসজিদের ইমাম ছিলেন। তিনি বরাবর লালবাতি ব্যবহার করেছেন। আমিও সেই প্রথা মেনে চলছি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘টিপু সুলতান মসজিদ হেরিটেজ সম্পত্তি। ইমামের গাড়ির লালবাতিটাও হেরিটেজ। এর সঙ্গে অন্য কারও তুলনাই হয় না।’’
আরও পড়ুন: বিয়েবাড়ি থেকে তুলে নিয়ে তরুণ সেনাকে খুন করল জঙ্গিরা
তাঁর গাড়ির লালবাতি নিয়ে অতীতে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল। ইমামের গাড়ি থেকে লালবাতি খুলে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। তার পরেও সেই লালবাতি রয়েছেই। কেন? তিনি কি কোনও জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত? বরকতি সাহেব বলেন, ‘‘আমি শাহি ইমাম। অনেক জায়গায় দ্রুত পৌঁছতে হয় আমাকে। আমার গাড়িতে লালবাতি থাকাটা তাই ভীষণ দরকার!’’
পরিবহণ দফতর কেন হাত গুটিয়ে রয়েছে? দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘নির্দেশ মানার বিষয়টি পুলিশের দেখার কাজ।’’ লালবাজারও কার্যত দায় এড়াতে চেয়েছে। ডিসি (সেন্ট্রাল) অখিলেশ চতুর্বেদী জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘বিষয়টি জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’