ওয়াকফ বিতর্কে লোকসভায় উপস্থিত ছিলেন না তৃণমূলের তিন সাংসদ। তা নিয়ে দল আলোচনা করবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
বুধবার রাত গড়িয়ে বৃহস্পতিবার যখন প্রায় ভোর হয় হয়, সেই সময় শেষ হয়েছিল লোকসভায় ওয়াকফ বিতর্ক। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা যখন অধিবেশন মুলতুবি ঘোষণা করলেন, তখন ঘড়ির কাঁটায় রাত ২টো ৪১ মিনিট। বিল নিয়ে বিতর্কের পাশাপাশি ভোটাভুটি হয়েছে। কিন্তু সেই বিতর্ক এবং ভোটাভুটিতে গরহাজির ছিলেন তৃণমূলের তিন সাংসদ। তাঁরা হলেন, ঘাটালের সাংসদ তথা অভিনেতা দেব, বীরভূমের সাংসদ তথা অভিনেত্রী শতাব্দী রায় এবং কোচবিহার থেকে ২০২৪ সালে প্রথম বার জিতে সংসদে যাওয়া জগদীশচন্দ্র বাসুনিয়া।
লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্যসচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই তিন জন সংসদে ওয়াকফ বিতর্কের সময়ে উপস্থিত ছিলেন না। তৃণমূলের সংসদীয় দল সূত্রে খবর, তিন জনের মধ্যে কেবল দেব সংসদীয় দলের এক সদস্যকে জানিয়েছেন, তিনি শুটিংয়ের জন্য ঝাড়খণ্ডে রয়েছেন। তাই তিনি সংসদে হাজির থাকতে পারবেন না। আনন্দবাজার ডট কমের পক্ষ থেকে তিন সাংসদের সঙ্গেই যোগাযোগ করার চেষ্টা হয়েছিল। যদিও একাধিক বার চেষ্টা করেও দেব এবং শতাব্দীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। মোবাইলে পাঠানো বার্তারও জবাব মেলেনি। তবে কোচবিহারের সাংসদ জগদীশ বলেন, ‘‘১ এপ্রিল আমি জানতে পেরেছিলাম যে পরের দিন ওয়াকফ বিল পেশ হবে। আমি পারিবারিক একটি সমস্যায় আটকে পড়েছিলাম। তাই যেতে পারিনি। একটু আগে জানতে পারলে অবশ্যই যোগ দিতাম।’’
ওয়াকফ নিয়ে প্রথম থেকেই সরব তৃণমূল। যৌথ সংসদীয় কমিটির একাধিক বৈঠকে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিলেন কল্যাণ। সেই তৃণমূলেরই তিন সাংসদ হাজির রইলেন না ‘আসল’ দিনে। উল্লেখ্য, বাংলার বিধানসভার অধিবেশনে যে মন্ত্রী, বিধায়কেরা ধারাবাহিক ভাবে অনুপস্থিত থাকছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে তৃণমূলের পরিষদীয় দল। সাংসদদের ক্ষেত্রেও কি সেই পথেই হাঁটবে সংসদীয় দল? এ প্রসঙ্গে আনুষ্ঠানিক ভাবে কল্যাণ কিছু বলেননি। তবে তৃণমূলের সংসদীয় দল সূত্রে খবর, তিন সাংসদের ক্ষেত্রে কী ভাবে এগোনো হবে, তা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেই ঠিক হবে। ঘটনাচক্রে, মমতাই তৃণমূলের লোকসভা ও রাজ্যসভার সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন। তৃণমূল সূত্রে এ-ও খবর, দিনের গুরুত্ব অনুধাবন না-করে যে তিন সাংসদ গরহাজির রইলেন, তাঁদের নিয়ে ‘বিরক্ত’ সর্বোচ্চ নেতৃত্বের একটি অংশও।